চাহিদা বাড়লেই ‘সিন্ডিকেট’

দুই লাখ টাকার অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ডেঙ্গুর এ সময়ে চাহিদা বেড়েছে ডিএনএস স্যালাইনের। এ সুযোগ কাজে লাগায় অসাধু ব্যবসায়ীরা। স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছে ওষুধ ব্যবসায়ীদের ‘সিন্ডিকেট’। এতে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের। চাহিদা বাড়লেই মেলে না প্রয়োজনীয় ওষুধ-স্যালাইন।

হাসপাতালের প্রধান গেইটের সামনে স্যালাইন কিনতে আসা ডেঙ্গু রোগীদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওষুধ ব্যবসায়ীরা বাজারে সংকট বলে দ্বিগুণ দামে ডিএনএস স্যালাইন বিক্রি করছে। ব্যবসায়ীরা বেশি দামে কিনে এনেছে বলে জানায়।

এদিকে ‘সিন্ডিকেট বাণিজ্য’ ঠেকাতে গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এতে ওষুধ ব্যবসায়ীদের কারসাজিসহ অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রির সত্যতা পাওয়া যায়।

এ সময় সাহান মেডিকোতে ২০ হাজার, সবুজ ফার্মেসিকে ১০ হাজার, ইমন মেডিক্যাল হলকে ২০ হাজার এবং পপুলার মেডিসিন কর্নারকে ৩০ হাজারসহ চার ফার্মেসিকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই অভিযানে ময়লা-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরির দায়ে ভান্ডারি এবং আল মঞ্জুর হোটেলকে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এ সময় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম সুলতানুল আরেফীন এবং পাঁচলাইশ থানার সাব ইন্সপেক্টর জাকির হোসেনসহ প্রশাসনের একাধিক কর্মচারী সহযোগিতা করেন।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এ অভিযানে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারীকে ক্রেতা সাজিয়ে বিভিন্ন ওষুধের দোকানে স্যালাইন কিনতে পাঠানো হয়। কিন্তু দোকানিরা তাদের স্যালাইন নেই বলে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত উপস্থিত হওয়ার পর তারা পর্যাপ্ত স্যালাইন বের করে দেয়।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি মূলত ডিএনএস স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন ওষুধ ব্যবসায়ী ‘সিন্ডিকেট’। তাছাড়া অভিযানে প্রায় ২ লাখ টাকার বেশি অনিবন্ধিত ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে চার ওষুধ ব্যবসায়ীসহ ৬ প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

অপরদিকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম মশিউর রহমান পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরিসহ বিভিন্ন অপরাধে চট্টগ্রামের বারকোড ফুড জংশন ও ফুলকলিক ফুড প্রোডাক্টকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রোপলিটন নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারহান ইসলাম জানান, মুরাদপুর এলাকায় বারকোড ফুড জংশনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে রান্নাঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফ্রিজে পচা মাংস সংরক্ষণ, অনুমোদনহীন ঘি ব্যবহার এবং কাঁচা ও রান্না করা মাংস একসঙ্গে রাখার বিষয়টি ধরা পড়ে। এসময় তাদের চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে বাকলিয়া এলাকায় ফুলকলি ফুড প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদন এবং উৎপাদন-মেয়াদে কারচুপি লেভেলিং প্রবিধানমালা লঙ্ঘন ও নি¤œমানের কাঁচামাল ব্যবহারের অভিযোগে পাঁচ লাখ জরিমানা করা হয়।