হানিফ রাজা »
ছোট্ট একটি গ্রামের এককোণে এক বুড়ো দম্পতি বাস করতো। তারা খুব গরিব ছিলো। তাদের কোন সন্তানাদি ছিলো না। বনে কাঠ কাটতো আর সে কাঠ বিক্রি করে দুবেলা খাবার যোগাত। একদিন তারা চিন্তা করলো, একটি আইসক্রিমের দোকান দেবে। তাই তারা কিছুদিন বেশি বেশি পরিশ্রম করে কাঠ কেটে বিক্রি করে কিছু টাকা জমিয়ে ফেললো। তারপর একটা আইসক্রিমের দোকান দিলো।
দুজনেই সারাদিন আইসক্রিম তৈরিতে ব্যস্ত থাকতো। বুড়োর স্ত্রীর নাম সীতা । দেখতে খুব সুন্দরী ছিলেন। এবং তার হাতে তৈরি আইসক্রিম আরো বেশি মিষ্টি ছিলো।
প্রতিদিন আইসক্রিম বিক্রি করে তাদের ভালোই দিন কাটছিলো। বুড়ি প্রতিদিন আইসক্রিম তৈরি করতো আর বুড়ো তা বিক্রি করতেন। তাদের আইসক্রিম অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি ছিলো বলে সুনাম সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।
একদিন গ্রামের সব শিশুরা একত্রিত হয়ে সেই বুড়ো দম্পতির দোকানে গেলো এবং বলল, ‘আমাদের জন্য একটা বিশেষ আইসক্রিম বানাও!’
তখন দম্পতি বুড়োবুড়ি হাসলেন এবং বললেন, ‘ঠিক আছে, কিন্তু তোমাদেরকে আমাদের একটি সুন্দর নাম দিতে হবে।’
শিশুরা চিন্তা করতে শুরু করল। একজন বলল, ‘মিঠাই আইসক্রিম!’ আরেকজন বলল, ‘রঙ-বেরঙের আইসক্রিম!’ শেষে তারা একসাথে বলল, ‘চাঁদের আলো আইসক্রিম!’ বুড়ো দম্পতি সেই নাম শুনে খুব খুশি হলেন।
পরের দিন, তারা নতুন আইসক্রিম তৈরি করতে শুরু করলেন। দুধ, চিনির সাথে সাথে বিভিন্ন রঙের ফলের রস যোগ করলেন। আইসক্রিমটি ছিল সাদা, নীল, পিঙ্ক এবং সবুজ রঙের। আইসক্রিম তৈরি হওয়ার পর সবাই একত্রিত হল এবং চাঁদের আলো আইসক্রিম খেতে শুরু করল।
আইসক্রিম খাওয়ার সময়, শিশুরা নিজেদের মধ্যে বেশ গল্প গুজব করতে শুরু করল। একে অপরকে বলছিল, ‘এটি আমার প্রিয় আইসক্রিম!’ বুড়ো দম্পতি তাদের খুশি দেখে খুব আনন্দিত হলেন। এরপর থেকে, চাঁদের আলো আইসক্রিম গ্রামের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইসক্রিম হয়ে গেল।
এভাবেই সারা গ্রাম চাঁদের আলো আইসক্রিমের মিষ্টি স্বাদ উপভোগ করতে লাগল এবং প্রতিদিন বুড়ো দম্পতির দোকানের সামনে গোল হয়ে বসে থাকত।
তখন থেকে সে আইসক্রিমের দোকান গ্রামে সবার হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান করে নিলো এবং সকলের আনন্দের উৎস হলো।
এভাবে, সারা গ্রামে একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং আনন্দের এক ঢেউ ছড়িয়ে পড়লো, যাতে অবদান রেখেছিল বুড়ো দম্পতির চাঁদের আলো আইসক্রিম।