নিজস্ব প্রতিবেদক »
বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. গোলাম ইয়াজদানীকে। গত বছরের ১৪ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নেওয়া আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে পদ্ধতিগত জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা নগর ভবনে প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে হামলা করেছে। হামলায় ভেঙেছে পরিচালকের টেবিল ও নামফলক। এমনকি তিনিও হামলার শিকার হয়েছেন।
গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে টাইগারপাসের চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আনুমানিক ৩০ জনের একটি দল নগর ভবনের চারতলার প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে এ হামলা চালায়। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়। এ সময় ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে কাজ দেওয়া প্রসঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়। পরবর্তীতে প্রকল্প পরিচালক লটারিবিহীন কাজ বিক্রির দায় দায়িত্ব না নেওয়ার কথা জানান। এর জেরেই ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা তার কক্ষে হামলা করে।
প্রকল্পের কাজ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঠিকাদাররা এই হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে ড. মো. গোলাম ইয়াজদানী বলেন, ‘লটারি না হওয়া ১২টি দরপত্র নিয়ম অনুযায়ী ম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে করতে চেয়েছি। কিন্তু দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা চেয়েছেন ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে। যে কারণে গত তিনমাস ধরে এ লটের কাজ ঝুলে আছে। সাধারণ সভায় লটারিবিহীন কাজ বিক্রির দায় দায়িত্ব না নেওয়ার কথা বলায় এক দল লোক এ হামলা চালিয়েছে।’
চসিক সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় ২৫টি লটে দরপত্রের বিপরীতে ১৩টি কাজ লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে প্রতিটি লটে দশ শতাংশ কম দরে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১২টি কাজ ৭ শতাংশের বেশি কমিশনে বিক্রি করা হয়েছে। তারমধ্যে একটি কাজ বিক্রি করা হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ঠিকাদার সমিতিকে। সেই কাজটি অন্য আরেক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে সেই ঠিকাদার সমিতি।
এ প্রসঙ্গে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার নেতৃত্বে যারাই থাকুক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রাথমিকভাবে সাহাবউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির নাম সামনে এসেছে। জেনেছি, কিছুদিন আগেও তারা কাজ না পেয়ে এলজিইডিতে হামলা চালিয়েছিল। পরবর্তীতে তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ছাড় দেওয়ার বা ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা দ্রুত অ্যাকশনে যাবো।’
এ নিয়ে খুলশি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’