নিজস্ব প্রতিবেদক : <<
কবি ও প্রচ্ছদ শিল্পী খালিদ আহসান আর নেই। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ সোমবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। খালিদ আহসান সত্তর দশকের তুখোড় কবি ও গীতিকার ছিলেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথমে চট্টগ্রামে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক কন্যা ও জামাতা এবং অসংখ্যা বন্ধু-স্বজন গুণগ্রাহী রেখে যান।
খালিদ আহসানের মরদেহ আজ সোমবার রাতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছাবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি ব্লক জামে মসজিদে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন দুপুর ১২টায় শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খালিদ আহসানের মরদেহ চেরাগী পাহাড় মোড়ে রাখা হবে। এরপর বাদ জোহর কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে কদম মোবারক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
খালিদ আহসানের জন্ম ১৯৫৭ সালের ৬ নভেম্বর। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, চট্টগ্রাম কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। স্কুলজীবনেই তিনি লেখালেখি শুরু করেন।
খালিদ আহসানের সম্পাদিত লিটল ম্যাগাজিন চোখ প্রচ্ছদ ও অলংকরণের জন্য মুক্তধারার সেরা পুরস্কার পেয়েছিলেন। লেখালেখির পাশাপাশি খালিদ আহসান ছবি আঁকায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।
আশির দশকে তিনি বইয়ের প্রচ্ছদশিল্পে এক নতুন ধারার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, হুমায়ুন আহমেদ, নির্মলেন্দু গুণ, হুমায়ুন আজাদ, সিকদার আমিনুল হকসহ বহু খ্যাতিমান কবি–সাহিত্যিকের বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ : শীতের কফিন থেকে উৎসারিত মানিপ্ল্যান্ট (২০০১), মন্দলোক ও কাঠের ঘোড়া (২০০৪), তোমাকে পানকৌড়িকে (২০০৮) ও এনেসথেসিয়া (২০১০), পৃথিবীর শিরা-উপশিরা (২০১২), কলম লিখেছে কবিতা আমি তার প্রথম শ্রোতা (২০১৪), বর্ণ, চক্ষু, অন্তঃকরণ (২০১৪), ঝিঁঝিঁর কনসার্ট (২০১৯)। তাঁর সম্পাদিত ছোট কাগজ : চোখ (১৯৭৮), বুলেট (১৯৭২)। প্রথিতযশা এই কবির প্রয়াণে গভীর শোক জানিয়েছেন অনেবকেই। ফেসবুকে তাঁর মৃত্যুতে অনেকেই স্মৃতিচারণামূলক লেখা লিখেছেন। কর কমিনার বাদল সৈয়দ লিখেছেন ‘যখন আমাকে তেমন কেউ চিনতো না, পাত্তা দিতো না, ঠিক সেসময়, আজ থেকে ১৫ বছর আগে দেশের সেরা চিত্রকরদের একজন ‘খালিদ আহসান’ আমার প্রথম উপন্যাস ‘জন্মজয়’ এর প্রচ্ছদ এঁকে দিয়েছিলেন। এক পয়সাও নেননি। অথচ তখন তিনি হুমায়ূন আহমেদসহ দেশের সেরা লেখকদের বইয়ের প্রচ্ছদ করতেন।
একজন প্রায় অপরিচিত তরুণকে যে মায়ার ঋণে তিনি বেঁধেছিলেন তা থেকে আমার বের হওয়া সম্ভব হয়নি। হবেও না। খালিদ ভাই আজ চলে গেছেন ‘