চবি প্রতিনিধি »
পূর্ব ঘটনার রেশ ধরে এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারো সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের দুটি পক্ষ। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছে। ভেঙে ফেলা হয় হলের ৮ টি রুম। সংঘর্ষের কারণ হিসেবে জানা যায় আলাওল হলের রুমের নিয়ন্ত্রণ।
গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে কোন্দল চলছে। এদের দুটি গ্রুপ। একটি গ্রুপ থাকে সোহরাওয়ার্দী হলে এবং অন্য গ্রুপ থাকে আলাওল ও এএফ রহমান হলে। এর মধ্যে ২০ ফেব্রুয়ারি আলাওল হলের কিছু রুমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে সোহরাওয়ার্দী হলের কর্মীদের ধাওয়া দেয় আলাওল হলের কর্মীরা। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুল দিতে গেলে অন্য পক্ষের উপর হামলা করে। যা পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে ১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও উভয় পক্ষের বিবাদের সমাধান আসেনি। এর রেশ ধরে গতকাল আলাওল হল ও এএফ রহমান হলে অবস্থানরত বিজয় গ্রুপের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত কর্মীদের উপর আকস্মিক হামলা চালায়। এ সময় হলের ৮ টি রুমের জানালা, দরজা ভাঙচুর করা হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হলের গ্রুপ পাল্টা আক্রমণ করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলের ছাদে ও অপরপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলের মাঠে অবস্থান নেয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে নেতাকর্মীরা যার যার হলের দিকে ফিরে যায়।
এ বিষয়ে বিজয় গ্রুপের একাংশের নেতা শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক নয়নচন্দ্র মোদক বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে যখন আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়েছিলাম, তখন তাদের কর্মীরা লাইট অফ করে আমাদের পাঁচজন কর্মীকে রামদা দিয়ে কুপিয়েছে। পরে অন্য পক্ষের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ২১ তারিখে হলের সমস্যা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তখন প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা চুপ ছিলাম। কিন্তু প্রশাসন সমস্যার সমাধান করেনি এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। তার কারণে আজকে (গতকাল) বিকেলে তারা হঠাৎ করেই আমাদের ছেলেদের উপর হামলা করে। আমাদের হলের রুম ভাংচুর করে।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে মধ্যে একজনের ক্ষতস্থানে সেলাইয়ের প্রয়োজন হয়। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট ড. শিপক কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘আলাওল ও এফ রহমান হল থেকে কিছু ছেলে এসে হঠাৎ হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাদের হলের অফিসসহ ৮টি কক্ষ ভাঙচুর করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনা শুনার সাথে সাথেই পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ সবাইকে যার যার হলে পাঠিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।