আহমেদ জুনাইদ, চবি
ক্লাব ফুটবলের মহাযুদ্ধ চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনাল। মাঠে স্প্যানিশ জায়ান্ট অল হোয়াইট রিয়াল মাদ্রিদ এবং ইংলিশ হট ফেবারিট অলরেড লিভারপুল। একপাশে আছেন কোল্ড ব্লাড ডন আনচেলত্তি তো অন্যপাশে সুপার ব্রেইন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ম্যাচ চলছে স্তাদিও দ্য ফ্রান্সে। গোটা বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত। ফুটবলের এই মহারণের উন্মাদনা বিভোর করে রেখেছে বাংলাদেশী ফুটবলপ্রেমীদেরও। সেই উত্তেজনা থেকে বাদ যায়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট পরিণত হয় একখণ্ড প্যারিসে। বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করে মাদ্রিদিস্তা চবিয়ানরা। রাত ১২টা বাজার সাথে সাথেই খেলা দেখার জন্য বিভিন্ন হল-কটেজ থেকে জিরো পয়েন্টে ভিড় করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। হাতে ছিলো বাঁশি, গায়ে জার্সি। অনেক শিক্ষার্থীই পরেরদিন ক্লাস পরীক্ষার ব্যস্ত শিডিউল। কিন্তু ঘুমের তাড়া নেই কারো চোখে। কারণ ফুটবলের এই মহা লড়াই মিস করা যাবে না।
ম্যাচ শুরু হতেই অবরুদ্ধ হয়ে যায় পুরো জিরো পয়েন্ট। কয়েকশত ফুটবলপ্রেমীর হুল্লোড়ে তা পরিণত হয় মিনি স্টেডিয়ামে। নিজ দলকে সমর্থন জানাতে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে দেখা যায় দর্শকদের। সাথে ছিলো তর্কাতর্কি ও স্লোগান। প্রথম থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে লিভারপুল। আক্রমণে আক্রমণে ব্যাস্ত রাখে রিয়াল রক্ষণভাগকে। তাই উচ্ছ্বসিত ছিলো লিভারপুলের দর্শকরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে যায় মাদ্রিদ। ফেডের পাস থেকে ভিনির সুনিপুণ ফিনিশিং আটকাতে ব্যার্থ হয় এলিসন। মুহূর্তের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর উল্লাসে ফেটে পড়ে মাদ্রিদের দর্শকরা। মাদ্রিদ মাদ্রিদ চিৎকারে অসহায় হয়ে পড়ে লিভারপুল সমর্থকদের কামব্যাক করার আশা। ম্যাচের শেষ হুইসেল বাজে রাত ৩.৪০ মিনিটে। চবিয়ান সাদা সমর্থকরা নিশ্চিত হয়ে যায় তারা ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা জয়ী। মুহূর্তেই শতশত মাদ্রিদ সমর্থকরা বের করে বিশাল র্যালি। র্যালিটি বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে আবার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। ব্যাতিক্রমী আমেজের এক রাত উদযাপন করে চবিয়ানরা।
মাদ্রিদের সমর্থক মাসুদ জানান, সাধারণত খেলা রুমে বসেই দেখা হয়। হঠাৎ কাল রাতে জানতে পারি বড় পর্দায় খেলা দেখানো হবে। বন্ধুদের নিয়ে চলে আসি। এতো হৈ-হুল্লোড় এবং আমাজের মধ্যে দিয়ে খেলা উদযাপন করেছি যে মনে হয়েছে ফ্রান্সে বসেই খেলা দেখেছি। ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন। আনন্দের মাত্র আরো বেড়ে গেলো। নিঃসন্দেহে স্মরণীয় একটি রাত হয়ে থাকবে।
লিভারপুলের সমর্থক জামিল জানান, ‘প্রথম থেকে মনে হচ্ছিলো ম্যাচ জিতে যাবো। উল্লাসও সেভাবে করেছি। কিন্তু হঠাৎ করেই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে একসাথে এতো দর্শক নিয়ে খেলা দেখা এই প্রথম। ম্যাচ হারলেও অনেক আনন্দ করেছি।
আয়োজক মেহেদি হাসান জানান, আমাদের পরিকল্পনা ছিলো চবি ক্যাম্পাসের সকল ফুটবল প্রেমীদের একত্র করার। ক্যাম্পাসে আমরাই প্রথম এতো বড় একটি আয়োজন করতে পেরেছি। সকলের সমর্থনে এটি ফুটবল প্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। আমি নিশ্চিত এখানে উপস্থিত থাকা প্রত্যেকের মাঝেই রাতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
„