উত্তর কাট্টলীতে অগ্নিকাণ্ড
৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরীর উত্তর কাট্টলীতে অগ্নিদগ্ধ ৯জনের মধ্যে একজন মারা গেছে। গুরুতর ৬জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। বাকি ২জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
গত রোববার দিবাগত রাতে উত্তর কাট্টলী কমিউনিটি সেন্টার রোডের মরিয়ম ভিলার ষষ্ঠতলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি আগামী সাতদিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।
এদিকে ওইদিন রাতে অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৯জনের মধ্যে ৬৫ বছর বয়সী পেয়ারী বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে মারা যান। তার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। অন্য দগ্ধদের মধ্যে মিজানুরের শরীরের ৩৬ শতাংশ ও সাইফুলের ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ দুইজনসহ দুবছরের শিশু মানহা, আটবছরের মাহেরা, বিবি সুলতানা ও সুমাইয়াকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ২২ বছর বয়সী রিয়াজের ১৮ শতাংশ এবং তার স্ত্রী সালমা জাহানের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। উভয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালারে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড সার্জারি ইউনিটের প্রধান রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন মারা যাওয়ার পর বাকি ৬জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের অনেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।
ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, রোববার রাত ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আক্রান্তদের কাউকে আমরা পাইনি। এর আগেই স্থানীয়রা তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে ঘরের মধ্যে কিছু পুড়ে যাওয়ার চিহৃ পাইনি।
তাহলে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কিভাবে হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। গ্যাস বা অন্য কোনো উৎস থেকে আগুন লাগার কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মরিয়ম ভিলা ভবনটি ছয়তলার। ছয় তলায় তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। মাঝখানের ফ্ল্যাটে দুটি পরিবার বাস করে। এর মধ্যে মিজানুর রহমানের কাছ থেকে সাব ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন রিয়াজ। রিয়াজের পরিবারের অপর সদস্য তার স্ত্রী সালমা জাহান। মিজানুর রহমানের পরিবারে তার মা পিয়ারা বেগম ও আরো একজন বেড়াতে এসেছিলেন। রাতে হঠাৎ বিস্ফোরণে রান্নাঘর ও ডাইনিং রুমটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর ছেলের বাড়িতে বেড়াতে এসেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ গেল মা পিয়ারা বেগমের। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস। পরিদর্শনের পর তিনি পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি আগামী সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে পাথরঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে মানুষের প্রাণহানি ও ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু এই ভবনটি তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে ভবনের ভেতরে বৈদ্যুতিক লাইনের মধ্যে সমস্যা হয়েছে বলে জানা গেছে।