নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘চট্টগ্রামের মানুষ যদি কোনো স্থাপনা না চায় তাহলে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘সিআরবি নিয়ে আপনারা যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরছেন, আমার মনে হয় এতটা করার কোনো অর্থ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণের জন্যই সবসময় কাজ করে আসছেন। চট্টগ্রামের মানুষ যদি সিআরবিতে কোনো স্থাপনা না চান, তাহলে সেটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার আমাদের প্রয়োজন নেই। সিআরবিতে হাসপাতাল নিয়ে তথ্যগত কোনো ভুল হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখার দরকার আছে। যে অভিযোগ দিয়ে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে সেটার ভিত্তি কতটুকু, সেটুকু যাচাই-বাছাই করার জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সিআরবিতে হাসপাতাল করা নিয়ে কয়েকদিন আগে একটা অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু এর আগেই আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের কথা পত্রিকা ও টেলিভিশনে দেখছি। কিন্তু কি নিয়ে আন্দোলন তা আনুষ্ঠানিকভাবে রেলওয়ের কাছে দরখাস্ত করেনি। এমনকি মন্ত্রী, সচিব বা রেলের ডিজির কাছেও কোনো আবেদন করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও কোনো দরখাস্ত দেওয়া হয়নি। কি কারণে এবং কেন এই আন্দোলন এই অভিযোগটা দেয়ার পর দরখাস্ত বা অভিযোগ দেওয়ার পর যদি জোর করে কোনো কিছু হয়, তাহলে আন্দোলনের প্রশ্ন আসবে।’
সিআরবি রক্ষা আন্দোলনের নেতারা বলেন, কিছুদিন আগে নয়, প্রায় দেড় মাস আগে অভিযোগ বা আবেদন করেছি হাসপাতাল অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের কো চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর রহমান সুপ্রভাতকে বলেন, ৬ আগস্ট রেল মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ পত্র দিয়েছি। ২৪ আগস্ট রেলমন্ত্রণালয় উন্নয়ন-১ শাখার উপ-সচিব মো. আলী আকবর স্বাক্ষারিত একটি প্রাপ্তি স্বীকার চিঠিও আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩-১৪ সাল থেকে সিআরবিতে হাসপাতাল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তখন কেউ আপত্তি তোলেনি। যখন বাস্তবায়ন পর্যায়ে আসছে তখন আপত্তিগুলো আসছে। আপত্তির কারণটা আগে জানাবেন। এখানে তো হাসপাতাল হচ্ছে, মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে।’
২০১৩-১৪ সাল থেকে বা ২০১৮ সাল থেকে কেন হাসপাতালে বিরোধিতা করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতা ইব্রাহিম হোসেন বাবুল বলেন, শুরু থেকে মানুষকে জানানো হয়নি। তাছাড়া তখন চুক্তিতে কোন জায়গায় হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তখন বলা হয়েছিল রেলওয়ের যে কোন জায়গায় হাসপাতালের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। যখন চট্টগ্রামবাসী জানতে পারলো সিআরবিতেই হাসপাতাল হবে তখন থেকে আন্দোলন শুরু করলো।
আন্দোলনকারীদের দাবি হচ্ছে সিআরবিতে হাসপাতাল না হয়ে অন্য কোথাও হোক, সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এক শ্রেণির মানুষ আছে, তাদের কোনো কাজই ভালো লাগে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, না সত্যিকারভাবে চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে কথা বলা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে।
নুরুল ইসলাম সুজন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত মন্তব্য করে বলেন, আমাদের তো অভিভাবক একজন আছেন। সিআরবি হাসপাতাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা সবার জন্য শিরোধার্য।
চট্টগ্রামবাসী না চাইলে হাসপাতাল হবে না
সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী