সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চসিক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। রাস্তা সংস্কার, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও আলোকায়ন চসিকের মূলকাজ। নগরবাসীর করের টাকায় এ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। নগরবাসীর কাক্সিক্ষত সেবা নিশ্চিত করতে না পারলে সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামীতে চট্টগ্রাম নগরীকে বাংলাদেশের একটি মডেল নগরী হিসেবে পরিণত করতে চাই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আন্দরকিল্লার পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ সংক্রান্ত পরিকল্পনা ও পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধন কার্যক্রম ত্বরান্বিতকরণে নবগঠিত জোনভিত্তিক জোন কর্মকর্তা, তদারকি কর্মকর্তা ও স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র আরো বলেন, চসিকের সুনাম ও খ্যাতি পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকা-ের উপর নির্ভর করে। নালা-নর্দমার পানি চলাচল সচল রাখা, নিয়মিত আবর্জনা অপসারণ, সড়কসমূহ পরিচ্ছন্ন রাখা সর্বোপরি পরিবেশবান্ধব স্বাস্থ্যসম্মত নগরী পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রমের উপর নির্ভরশীল। কাজের সুবিধার্থে জনবল, যন্ত্রপাতি যাবতীয় সহায়ক উপকরণ নিশ্চিত করার পরও কাক্সিক্ষত সুফল নগরবাসী উপভোগ করতে না পারা খুবই দুঃখজনক। তাই পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকা- গতিশীল করার জন্য ৪১ ওয়ার্ডকে ৬টি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি জোনে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবেন। তার অধীনে তত্ত্বাবধায়ক, পরিদর্শক, সুপারভাইজার কাজ করবেন। জোনওয়ারি সার্বিক তদারকির জন্য ৬ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তাগণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোনওয়ারি প্রতি পাক্ষিকে মূল্যায়নপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আশা করি এ পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হলে দু’মাসের মধ্যে নগরীর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
মেয়র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পরিচ্ছন্ন বিভাগের যাবতীয় কর্মকা-ের দায়িত্ব যাদেরকে দেয়া হয়েছে তাদের কোন রকমের অবহেলা, গাফিলতি ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় এনে চাকরিচ্যুতসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি নগরবাসীর পাশাপাশি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, দোকানমালিকদের দিনের বেলায় রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে কোন ধরনের ময়লা আবর্জনা না ফেলে বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে এনে দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর ব্যত্যয় হলে তাদের বিরুদ্ধে চসিক ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১’র আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নগরীর যত্রতত্র পোস্টার, ব্যানার ও ফ্যাস্টুন যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাগানো হয়েছে এবং উচ্ছেদকৃত স্থান, জায়গা পুনরায় বেদখল রোধে মনিটরিং কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি চসিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মতৎপরতা বাড়ানোর জন্য আরো তিনজন বিসিএস কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবস্থা নিতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে সভায় অবহিত করেন।
তিনি মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য আলাদা টিম গঠন ও এদের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে বলে সভাকে অবহিত করেন। মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলী, কাউন্সিলর কাজী নুরুল আমিন, সচিব খালেদ মাহমুদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল বারী, আশিকুল ইসলাম, বিপ্লব কুমার দাশ, মীর্জা ফজলুল কাদের, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা, আবু তাহের সিদ্দিকী, আলী আকবর, শেখ হাসান রেজা প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি