কেন্দ্রের নির্দেশনা
নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া <<
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এবং চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কক্সবাজার জেলা এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
বৈঠকে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাশ এমপি, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, সৈয়দ আক্ষদুল আউয়াল শামীম ছাড়াও বৈঠকে কক্সবাজারের তিনজন সাংসদ, জেলা এবং চকরিয়া উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও চকরিয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা। তারা বলেন, বেশ কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে এমপি জাফর আলম ও জাহেদুল ইসলাম লিটুকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। তবে শর্তের মধ্যে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে চকরিয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। তারাও কথা দিয়েছেন নৌকার বিজয়ে সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবেন। এছাড়া সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় সেইধরনের কাজ থেকে সবাই বিরত থাকবে।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক এম এ মঞ্জুর বলেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমপি জাফর আলম ও লিটুর অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অনভিপ্রেত আচরণের জন্য এমপি জাফর আলম ক্ষমা চেয়েছেন।
তিনি বলেন, এছাড়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা হলো আগামী ১৭ জুন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী একটি কর্মী সভা আহ্বান করবেন। সেখানে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এমপি।
গত ৮ জুন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং চকরিয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগে মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিপক্ষে কৌশলে কাজ করার অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটুকে দলীয় পদবি থেকে অব্যাহতি দেন।
এর জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ জুন রাতে চকরিয়া চিংড়ি চত্বর এলাকায় চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও চকরিয়া পৌর নির্বাচনে নৌকার মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাংসদ জাফর আলম ছাড়াও চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হাসানুল ইসলাম আদর ছিলেন দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে অভিযোগ করেন আক্রান্ত নেতৃবৃন্দ।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ জুন জরুরি সভা করেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওই দিনের সভায় এমপি জাফর আলমকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিষয়টির আলোকে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেন জেলা আওয়ামী লীগ। এরই প্রেক্ষিতে সর্বশেষ ১৩ জুন ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কক্সবাজার জেলা এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।