সুপ্রভাত ডেস্ক »
দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা গাজায় পানি, খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ইসরায়েল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করার পর ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে; বিদ্যুৎবিহীন ভূখ-টিতে খাবার ও পানির ঘাটতি মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে।
গত বুধবার গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার পর সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, বাসিন্দারা তাদের মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে গাড়ির ব্যাটারি ব্যবহার্ করছেন।
রাত নেমে আসার পর গাজা শহরের অধিকাংশ এলাকায় ও ভূখ-টির অন্যত্র ঘন অন্ধকারে ডুবে যান ফিলিস্তিনিরা। গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফায় মাত্র তিনদিন চলার মতো জ্বালানি আছে বলে জানিয়েছেন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস এর গাজাভিত্তিক কর্মকর্তা ম্যাথিয়াস কানস। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, গাজায় তাদের পরিচালনাধীন দুটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, অ্যান্টিবায়োটিক, জ্বালানি ও সরবরাহ ফুরিয়ে যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতাল আহতদের দিয়ে ভরে গেছে, এতে অক্সিজেনসহ চিকিৎসা সরবরাহ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।
বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করতে ছুটতে থাকায় দোকানগুলো থেকে টিনজাত খাবার দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। ভূখ-টির একমাত্র কসাইখানাও বন্ধ রয়েছে। সীমান্ত বরাবর উৎপাদিত সবজির সরবরাহ অপ্রতুল হয়ে উঠেছে।
ইসরায়েল বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটিতে একের পর এক ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। এতে গাজা শহরের অনেকগুলো এলাকা পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কতোজনের মরদেহ চাপা পড়ে আছে তা অজানাই থেকে যাচ্ছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এর মধ্যে ইসরায়েল যেকোনো সময় স্থল হামলা শুরু করবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা বিরাজ করছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ইতোমধ্যে ২ লাখ ৬০ হাজার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্র স্কুলগুলোতে উঠেছে।
দুই দিকে ইসরায়েল, একদিকে মিশর ও অন্যদিকে ভূমধ্যসাগরের মাঝে মাত্র ৪০ কিলোমিটার লম্বা ভূখ-টিতে নিরাপদ স্থান ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসায় গাজার অপরাপর বাসিন্দারাও অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে অনিশ্চিত পরিস্থিতির মোকাবেলা করছেন।