সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সফলভাবে ‘কৌশলগত অংশীদারত্বের’ স্তরে উন্নীত হয়েছে। বাসস জানায়, বুধবার টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিশিদা এবং আমি আজ আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আনন্দিত যে বাংলাদেশ ও জাপান বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সফলভাবে ‘বিস্তৃত অংশীদারত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করেছে।
‘আমি নিশ্চিত, আমাদের দুই দেশের জনগণ এবং আমাদের সরকারের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা আগামী বছরগুলোতে আরও দৃঢ় হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হয়েছে, তাতে কৃষি, শুল্কায়ন, প্রতিরক্ষা, আইসিটি এবং সাইবার-নিরাপত্তা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডিং, মেধাস্বত্ব, শিপ রিসাইক্লিং এবং মেট্রো রেলের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়গুলো ভবিষ্যতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে।
শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ফুমিও কিশিদা। সেখানে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয় বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
দুই সপ্তাহে তিন দেশ সফরের শুরুতে মঙ্গলবার জাপানে পৌঁছান শেখ হাসিনা; বুধবার তিনি টোকিওর ইম্পেরিয়াল প্যালেসে জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশাদা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বুধবার টোকিওতে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। খবর বিডিনিউজ।
তার আগে জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি লিগের প্রেসিডেন্ট তারো আসো, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ও সিইও ইশিগুরো নোরিহিকো, জাইকার প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিকো, বাংলাদেশ-জাপান কমিটি ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন এর চেয়ারম্যান ফুমিয়া কোকুবু আলাদাভাবে টোকিওর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন আকাসাকা প্যালেসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
২৭ এপ্রিল টোকিওর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) আয়োজিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। ওইদিন চার জন জাপানি নাগরিককে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ‘মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননা’ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে এক নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
জাপান সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর আরও কিছু দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জেবিক, জেবিপিএফএল, জেবিসিসিইসি’র নেতৃবৃন্দ, জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শিনজো আবের সহধর্মিণী আকিয়ে আবে এবং জাপানের স্থপতি তাদাও আন্দো সাক্ষাৎ করবেন তার সঙ্গে।
এছাড়া জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দেবেন প্রধানমন্ত্রী। টোকিও থেকে ওয়াশিংটনে গিয়ে ১ মে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা।এরপর সেখান থেকে ৪ মে লন্ডনে গিয়ে রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। সফর শেষে ৯ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।