নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতকানিয়া »
সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতুলি এলাকায় শঙ্খ নদী হতে উত্তোলনকৃত বালু রাখা নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বৃদ্ধ, কলেজ ছাত্রসহ ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে চরতী ইউনিয়নের তুলাতুলি শঙ্খ নদীর তীর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন আবদুল মালেক (৫০), মো. কায়সার (২৮), মো. রুবেল (২১), আবু তাহের (৩৬), ফয়েজ আহমদ (৬০), নুরুল হাসান (৫০), হাফেজ আহমদ (৫৫), মো. মানিক (২৫), ইয়াকুব হোসেন (৫৫), শাহেদুল ইসলাম (২০), মো. রিপন (১৮), জিয়াউর রহমান (২১), রুহুল আমিন (৫৫), মো. ইব্রাহীম, মো. ফারুখসহ অজ্ঞাত আরো ৩ জন। এদের মধ্যে নুরুল হাসান ও আবদুল মালেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চরতী ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকায় শঙ্খ নদী হতে দীর্ঘদিন যাবৎ নদী ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ওই বালু স্তুূপ করে রাখার ফলে এলাকার কৃষকের শত শত কানি আবাদি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। তাই এলাকার কৃষকরা তাতে বাধা দেয়। বালু উত্তোলন কাজে সহযোগিতা করে আসছেন চরতী এলাকার রুহুল্লাহ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি। গতকাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিছু লোক উত্তোলনকৃত বালু কোথায় রাখা হবে সে স্থান ঠিক করার জন্য চরতীর তুলাতুলি আসার কথা ছিল। এ খবর জানাজানি হলে এলাকার কৃষকরা ওই স্থানে তাদের কষ্টের কথা জানাতে যাওয়ার পথেই তাদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটে। গুলিবিদ্ধরা অভিযোগ করেন, এ ঘটনা রুহুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে করা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও চরতী ইউনিয়নের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দীন খান মিন্টু নিরীহ কৃষকদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কে এবং কারা নিরীহ কৃষকদের গুলি চালাল তার ভিডিও ফুটেজ এলাকার লোকদের কাছে আছে। ওইসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীদের আইনের আওতায় আনা হোক।
উপজেলার চরতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিম ঘটনা সম্পর্কে বলেন, বালু উত্তোলন সংক্রান্ত ঘটনায় ৭ নিরীহ লোক গুলিবিদ্ধসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কলেজছাত্র, কৃষক ও দিনমজুর রয়েছে। এলাকার লোকজন ও গুলিবিদ্ধদের নিকট তিনি জানতে পারেন এ ঘটনা রুহুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে হয়েছে। চেয়ারম্যান আরো জানান, উক্ত ঘটনায় ২০ রাউন্ডের অধিক গুলি ছোঁড়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রুহুল্লাহ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে বার বার রিং করলেও তিনি সংযোগ কেটে দেন।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী ড্রেজিং এর বালু ফসলি জমির উপর রাখার প্রক্রিয়া করলে এলাকার কিছু কৃষক উক্ত কাজে বাধা দেয়। এ ঘটনায় মারামারিতে ১ জন, ছররা গুলিতে গুলিবিদ্ধসহ ৮-১০ লোক আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।