চট্টগ্রামের ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুটিতে আরেক দফা বড় আকারে সংস্কার করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। এবারের সংস্কারকাজে লাগবে অন্তত ৫৫ কোটি টাকা। ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০০৪ ও ২০১২ সালে দুই দফায় সেতুটি সংস্কার করেছিল রেলওয়ে। কিন্তু এরপরও সেতুটির অবস্থা জরাজীর্ণ।
কক্সবাজারে স্বপ্নযাত্রার রেলরুটে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কালুরঘাট রেলসেতু। কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় এই রেল কাম সড়ক সেতু। নকশাসহ নানা জটিলতায় থমকে আছে নতুন সেতু। ফলে জীর্ণ সেতুটিই এখন ভরসা।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। দোহাজারী-কক্সবাজার রুটের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে কক্সবাজার অংশের ৫০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রামের দিকের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ২৫ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি অবশিষ্ট ২৫ কিলোমিটারের কাজ আগস্টের মধ্যে শেষ করতে পারবো। এই ২৫ কিলোমিটারের মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু স্লিপার আর রেল বিট বসবে।
শুধু রেল লাইনের কাজ শেষ হলে তো হবে না। কালুরঘাট সেতু সংস্কারও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, বর্তমানে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে ট্রেনের ১০ টন ভারী ইঞ্জিন চলাচল করে। এ সময় গতি থাকে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। কিন্তু কক্সবাজারগামী ট্রেনের ইঞ্জিনের ভর হবে ১২ থেকে ১৫ টন। ট্রেনের গতি সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। কালুরঘাট সেতুর বর্তমান অবস্থার কারণে এই গতিতে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে না। অন্তত ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে। এ জন্য বুয়েটের পরামর্শক দলের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সেতু সংস্কার করা হবে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন ইতোমধ্যে দিয়েছে। এছাড়া আরও দুটি প্রতিবেদন এ মাসে জমা দিবে। সহসাই দরপত্র আহ্বান করা হবে।
বোয়ালখালী, পূর্ব পটিয়া এলাকার মানুষের যোগাযোগের ভরসা কালুরঘাট সেতু। এ সেতু নিয়ে ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। সেতু পুনর্নিমাণে প্রস্তাবনা থাকলেও তা কার্যকর হওয়ার আগে সেতু সংস্কার করে শুধু রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাই জনদুর্ভোগ লাঘবে সেতুর নিচে ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তিনটি ফেরি নিয়ে আসা হলেও টোল নির্ধারণ জটিলতায় সেগুলো কয়েকমাস ধরে পড়ে আছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বলছে শাহ আমানত সেতুর টোলের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা করে এই ফেরির নির্ধারণ করা হবে। টোল নির্ধারণ হলে ফেরি চলাচলে আর কোনো বাধা থাকবে না।
সাময়িক দুর্ভোগ কমানোর পরিকল্পনা হিসেবে সেতু সংস্কার ও ফেরি চালু সামান্য উপশম দিবে কেবল। নতুন সেতু ছাড়া স্থায়ী সমাধান মিলবে না।
এ মুহূর্তের সংবাদ