নিজস্ব প্রতিবেদক »
গত সপ্তাহে বাড়তি ছিল প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। কেজিপ্রতি অন্তত ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। প্রায় সবরকম সবজির কেজিপ্রতি দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামও কিছুটা কমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর চকবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া যায়।
গতকাল নগরের চকবাবাজার ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে কাকরোল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছিল ৮০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪০ টাকা দরে। এছাড়া বেগুন মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ ও শসা ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা। লেবু মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। অর্থাৎ প্রায় সবরকম সবজি গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এছাড়া গাজর ২০ টাকা, ঢেড়শ ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা ও আলু ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজারের চেয়ে ভাসমান ভ্যান গাড়ি ও ফুটপাতের বাজারে এসব সবজির দাম আরও ৫ থেকে ১০ টাকা কমে মিলছে।
সবজি ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে সবজির সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। তাই দামও কিছুটা কমেছে। সরবরাহ ঠিক থাকলে দাম বাড়বে না বলে জানান তারা।
চকবাজার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. সবুজ জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কমেছে। কাঁচামরিচ, ঢেড়স, শসা, বরবটি ও করলা ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। শসা গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ৮০ টাকায়। আজ বিক্রি করছি ৪০ টাকা কেজি।’ সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে দাম বাড়বে না বলে জানান তিনি।
বহদ্দারহাট বাজারে আসা নুরুন নবী বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে। ৬০ থেকে ৮০ টাকায় কেনা সবজি এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে এসেছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করলে দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকবে।’
চকবাজার কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘গত সপ্তাহে কাকরোল কিনেছিলাম ১০০ টাকার উপরে। কিন্তু আজ কিনলাম ৮০ টাকায়। ঢেড়শ, বরবটি, শসা, কাঁচামরিচের কেজি ৪০ টাকা এবং ধনেপাতার কেজি ৮০ টাকায় কিনলাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এসব সবজি ১০ থেকে ২০ টাকায় কমে কিনেছি।’
এদিকে, মাছের মধ্যে রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ৩৫০ টাকায়, লাল কোরাল ৪৮০ টাকা, সাদা কোরাল ৪৮০ টাকা, তাইল্লা মাছ ৪২০ টাকা, পাবদা মাছ ৩২০ টাকা, লাল পোয়া ৩০০ টাকা, রূপ চান্দা ৪৫০ টাকা, কালো চান্দা মাছ ২৬০ টাকা, সুরমা মাছ ১৮০ টাকা, ছুরি মাছ ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, লইল্লা চিংড়ি ৬০০ টাকা, ইলিশ মাছ ৬৮০ টাকা, কোরাল মাছ ৩২০ টাকা, চান্দা মাছ বড় ৫৫০ টাকা, দাতিনা কোরাল ৪০০ টাকা, টেক চান্দা ২৫০ টাকা, দাড়ি পোয়া ২০০ টাকা, লইট্টা ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
বাজারে মাছের দাম স্থিতিশীল বলে জানান রনি ফিস সেন্টারের প্রোপাইটর মো. রনি।
তিনি বলেন, ‘২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বাণিজ্যিক ট্রলারের মাধ্যমে সব ধরনের মাছ ও চিংড়ি আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর ফলে সে সময়ে বাজারে সামুদ্রিক মাছ আসবে না আর। তাই মিঠা পানির মাছের ওপর চাপ বাড়বে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়তে পারে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা, লেয়ার মুরগী ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গরু ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ও খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামে। এছাড়া কমেছে ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম। প্রতি ডজন ডিম (ফার্ম) ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ও দেশি হাঁসের ডিম প্রতিডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’