কমিশন এক মাস সময় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়

সুপ্রভাত ডেস্ক »

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে। কমিশন কোনো অবস্থাতেই এক মাস সময় নিয়ে এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়। আমরা মনে করি না যে আগামী এক মাস ধরে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা ঐকমত্যের জায়গায় উপনীত হতে পারবো।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, নতুন করে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর আরেকটি কারণ হচ্ছে যে, যেকোনো কার্যালয় যদি প্রায় এক বছর ধরে অব্যাহত থাকে, সেটা গুটিয়ে তুলতেও খানিকটা সময় লাগে। আমরা যেন মেয়াদের মধ্যেই সেটি গুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই আমরা এখানে আজকে উপস্থিত হয়েছি।

আলী রীয়াজ বলেন, ১১ সেপ্টেম্বরের পরে আপনাদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছিল, আপনারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে আরো সুনির্দিষ্ট করে কিছু প্রস্তাব দিতে পারেন কি না। যেগুলো আরো বিকল্পগুলোকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং সম্ভব হলে একমত জায়গায় যেন আমরা আসতে পারি। আপনাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বশেষ যখন মিলিত হয়েছিলাম তখন আপনারা আপনাদের দলীয় অবস্থান এবং দলীয় অবস্থানের বাইরেও আপনাদের অবস্থানগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। বিস্তারিতভাবে তার আগে আপনারা লিখিতভাবে দিয়েছেন। তার সারাংশ আমরা উপস্থাপন করেছি। তার পাশাপাশি আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি এমনকি যেদিন সর্বশেষ আমরা এখানে সবাই মিলিত হই এবং প্রধান উপদেষ্টা এখানে উপস্থিত ছিলেন।

‘আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট মতামত সুপারিশ হিসেবে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য ছিল সেগুলোকে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করেছিলাম। আপনারা বলেছিলেন বেশ কিছু বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়।’

তিনি বলেন, আমরাও কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করেছি, অত্যন্ত দ্রুততার সম্ভব সঙ্গে বাস্তবায়িত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেসব বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশে করা যায় সেগুলো যেন তারা দ্রুত করেন।

তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আমাদের যেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল আছে তারা দুটো কথা বলেছিলেন, একটি হচ্ছে গণভোট, আরেকটি বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের কথা। সব কিছু বিবেচনা করে প্যানেলের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেটি আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা সরকারকে একাধিক পরামর্শ দিতে পারি বাস্তবায়নের, যেটা তুলনামূলকভাবে সরকারের জন্য সহজতর হবে, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সাংবিধানিক বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে তারা পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণের জন্য ২১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাইরে থাকবেন, নিউইয়র্কে থাকবেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখার জন্য। তিনি ২ অক্টোবর ফিরবেন। আমরা এই প্রক্রিয়াটির পরিণতির জায়গা অর্থাৎ আমাদের দিক থেকে যে সুপারিশ সেটা আসলে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে তার সঙ্গে আলোচনা করে দিতে চাই। ২১ তারিখের আগে যদি আমরা একমত হতে পারি বা বিকল্পগুলো নিশ্চিত হতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সেটা তাকে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। অন্যথায় আমাদেরকে কিছুটা সময় নিতে হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, এরইমধ্যে আপনাদের কাছে সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি যদি তথ্যগত ত্রুটি থাকে তাহলে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করুন। কারণ তথ্যগত ত্রুটি থাকতেই পারে দু-একটা ক্ষেত্রে এবং আমরা সেগুলো অবশ্যই সংশোধন করব।