কবিতা

বিরহ দুপুর

মান্নান নূর

সবুজ পাতার ফাঁকেই ফুল ফোটে
হিরণ¥য় সময় এলেই প্রেম হয়ে যায়।

ফুলের সৌন্দর্য যখন সবুজ পাতাকে ম্লান করে দেয়,
ফুল নিঃসঙ্গ মরে, একা একা ঝরে।

প্রেমের প্রগাঢ়তায় হিরণ¥য় সময় যখন পরিত্যক্ত ভোর,
আকাল ডেকে আনে বিরহ দুপুর।

 

আমি একটি পয়সা

রহমান মুজিব

আমি একটি পয়সা
আমি আমাকে হারিয়ে ফেলেছি
সন্ধ্যার হাটভাঙা বাড়ির পথে
কলম্বাসের কম্পাস- পারো তো খুঁজে দাও
গ্যালাক্সি বনের ধ্রুবতারা

কে জানে, কার পা, কখন পিষ্ট করে
কার বুকের আধুলি

আধুলির মতো রক্তহীন ফ্যাকাসে শহর, শোন
আমায় যদি পেয়ে থাক, সযতনে রেখে দিও
তোমার বাম পকেটে, বাজতে দিও না অহমের
এতটুকু ঝনঝন

আমি একটি পয়সা
হাত বদলের কুৎসিত পরিধি ঘুরে ঘুরে
আজ আমি ক্লান্ত, শেকরহীন, তামাটে অনর্থ

 

অনন্ত অক্ষমতার প্রতি

মাসুদ চয়ন

শূন্য ও আকাশ মৃত-.
থিকথিকে ভেজা কাতরতা বুকে পাজরে…
গুলিবিদ্ধ প্রকৃতিও –
প্রকৃতির রক্তে ভিজে গেছে কবিতার বুক –
আমি দাঁড়িয়ে আছি কবিতাকে বাঁচাতে-
আমি দাঁড়িয়ে আছি রক্তশূন্য মমি হয়ে –
যদি একবিন্দু রক্তের যোগান দিতে তুমিও!
শূন্য ও আকাশ চোখ খুলে তাকাতো-
ঘুরে দাঁড়াতো গুলিবিদ্ধ স্বরুপ প্রকৃতি।
পিছু পা হতো রেজিমেন্ট রুল,
অথৈ সৈন্য সামন্ত।

 

 

আঘাত

হাফিজুর রহমান

গায়ে না, হৃদয়ে লেগেছে!
জমাট বাঁধা রক্তের,
একই গ্রাফিতির কালো প্লেকার্ড
আমরণ অনশনে।

শান্তি নেই
ভালো লাগে না – অসুস্থ মনে।

 

ফুলের সাথে কথা কও

ফারুক মোহাম্মদ ওমর

প্রথমে মঞ্চভয় জয় করে
তোমার মানুষ চিনে নাও

চিনতে চিনতে যখন একটু বিভ্রম
একটু সত্যি বাকিটা গনগনে আগুন
ফালাফালা করে দেবে
শালীনতার জীবন্ত অভিজ্ঞান—
তখন তুমি ফুলের সাথে কথা কও
কেননা ফুল সুন্দর আর মানুষ মরণশীল।

 

কে আছে এমন

সুশান্ত হালদার

শুনছো,
ভেঙে যাচ্ছে নদীর কূল, প্রাগৈতিহাসিক প্রাচীন দেয়াল
কুতুব মিনার, ফৌজি দূর্গ থেকে শহিদ মিনার
ঝুমকো লতার বকুল বিছানো পলাশ রাঙা ডাল

কে আছে এমন
রোদে জলে ভিজে, আগুন সূর্য্য বগল-দাবা করে
গড়ে দেবে আমার পিতৃ প্রদত্ত জননী আহ্লাদিত সংসার?

শুনছো
ভেঙে পড়ছে সাঁকো, মেট্রোরেল, ব্রিজ কালভার্ট সেতু
উঁচু উঁচু গম্বুজ, হাসি মাখা সূর্য্য দুপুর

কে আছে এমন
দু‘হাতে সমস্ত ক্লেদ শ্লেষ্মা থুতু ঝেড়ে ফেলে
তমসুক আঁধারে হেঁটে যাবে পথ, ধ্বনিত বজ্র মিছিলে?