আবাসস্থল ও বিচরণক্ষেত্র ধ্বংস
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
কক্সবাজারের রামু উপজেলার পানেরছড়া রেঞ্জের আওতাধীন দক্ষিণ মিঠাছড়ি পাহাড়ি এলাকায় এক বন্য হাতির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রোববার হাতিটির মৃত্যুর খবর পেয়ে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা জানান, বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হাতিটিকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি সত্যি হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, মারা যাওয়া হাতিটি বয়স্ক হাতি। হাতিটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। যেখানে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে, তার কয়েকশ গজের মধ্যে কোন বিদ্যুতের লাইনও ছিল না বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে, এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলতি বছরের জুন মাসে টেকনাফের হ্নীলায় বৈদ্যুতিক তারের সাথে লেগে একটি হাতির মৃত্যু ঘটেছিল। ওই ঘটনায় বনবিভাগ মামলা দায়ের করে।
এছাড়া গত দুই বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ১২টি হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
উখিয়া-টেকনাফের ১০ হাজার একর গভীর বনাঞ্চল তিন বছর আগে ১১ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধীনে চলে যাওয়ায় দিন দিন হাতির আবাসস্থল ও বিচরণক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসছে। পুরো এলাকায় রোহিঙ্গাদের বিচরণ বেড়ে যাওয়ায় রামু-উখিয়া- টেকনাফের সঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবানের হাতির ২৩টি নিরাপদ চলাচলের করিডোর রুদ্ধ হয়ে গেছে। এ এলাকায় ৬০টিরও অধিক হাতির চলাচল রুদ্ধ হয়ে পড়েছে। নির্বিচারে কাটা হয়েছে গাছ। খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে হাতি চলে আসায় হাতির আক্রমণের শিকার হচ্ছে গ্রামের লোকজন।
উখিয়া কুতুপালং মেগা ক্যাম্পের লম্বাশিয়া এবং মধুরছড়া ছিল হাতির নিরাপদ আবাসস্থল। সেটিও এখন নেই। গত তিন বছরে হাতির আক্রমণে ১৩ জন রোহিঙ্গাসহ ২২ জনেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।