নিজস্ব প্রতিনিধি, ফটিকছড়ি :
ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার দায়ে এবার মামলায় পড়লেন ফটিকছড়ির ভূজপুর থানার ওসি শেখ আবদুল্লাসহ ৬ পুলিশ, একজন স্থানীয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহত প্রবাসী স্ত্রী শারমিন আক্তার। গত বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খোরশেদুল আলমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূজপুর থানা পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হাটহাজারী সার্কেলকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ভূজপুর থানার ওসি-তদন্ত ওবায়দুর রহমান, থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, এসআই রাশেদুল হাসান, এসআই প্রবীর দেব, এএসআই কল্পরঞ্জন চাকমা, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মান্নান।
গত ২৩ মে রাত ২টায় ভূজপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে একদল দুর্বৃত্ত। এ মামলার প্রধান আসামি প্রবাসী হেলাল উদ্দিন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। নিহত হেলাল একই এলাকার জাফর আলমের ছেলে। নিহত হেলাল উদ্দিনের ভাই জসিম উদ্দিন জানান, আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
হেলালের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। স্থানীয় মান্নান আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে পুলিশে হাতে তুলে দেয়। পুলিশ আমার স্বামীকে রাতে মেরে ফেলেছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
মামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ‘ভূজপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেটি শুনেছি। তবে এখনও আমার হাতে কোনো কাগজপত্র আসেনি। তবে এর আগে আদালত থেকে স্থানীয় থানায় কোনো ইউডি মামলা হয়েছে কিনা সেটি জানতে চেয়েছে আদালত। সেটির প্রতিবেদন হাটহাজারী সার্কেল থেকে জমা দেয়া হয়েছে।’
বাদিপক্ষের আইনজীবী দেওয়ান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মামলাটি ফাইল করার সময় ছিলাম। আমরা মামলাটি তদন্তের জন্য র্যাবকে দেওয়ার আবেদন করেছি। তখন আদালত বলেছেন, বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত শেষে র্যাবকে দেবো।’ এ বিষয়ে ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবদুল্লাহ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে থানা পুলিশের একটি দল আঁধারমানিকের গলাচিপা এলাকায় গেলে প্রধান আসামি হেলাল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। তবে আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’