এস আলম গ্রুপ থেকে ১৯৬ কোটি টাকার তেল কিনবে সরকার 

সুপ্রভাত ডেস্ক »

এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান থেকে ১.৫০ কোটি লিটার ভোজ্য তেল কিনছে সরকার। ১৯৬.৩৪ কোটি টাকার এই ভোজ্য তেল কেনা হচ্ছে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে। এছাড়া নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান থেকে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৯৫.৯৭ কোটি টাকায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কিনছে সরকার।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এক বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত নথির তথ্যানুসারে, এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৩৮.১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪০ টাকা। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৩.৩৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি ১.১০ কোটি লিটার পরিশোধিত খোলা পাম তেলও কেনা হবে। এই তেলের প্রতি লিটারের দাম ধরা হয়েছে ১৩০ টাকা; এতে মোট ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি টাকা।

এছাড়া নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি ডাল ৯৫.৯৭ টাকা দরে মোট ৯৫.৯৭ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী রমজানে ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসব তেল ও ডাল কেনা হচ্ছে। টিসিবি তাদের ইস্যু করা ফ্যামিলি কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে একবার করে কয়েক লাখ পরিবারকে ভর্তুকি মুল্যে ভোজ্য তেল, ডাল, চিনি, চাল সরবরাহ করে থাকে।

আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এস আলম ও নাবিল গ্রুপের নানা ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়েছে। বিশেষত ব্যাংক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ ঋণ নেওয়া, খেলাপি ঋণ, সাবেক সরকারের আমলে অর্থপাচারে জড়িয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।

এক কার্গো স্পট এলএনজি ক্রয়

ষ্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। সিঙ্গাপুরের  ভিটোল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ১৫.০২ মার্কিন ডলারে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে খরচ হবে ৭০৮.৫৬ কোটি টাকা। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই এলএনজি দেশে আসবে।

১৩ টন লাখ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল

আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি থেকে ২০২৫ সালের জন্য ৬ লাখ টন মারবান গ্রেডের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা।

পাশাপাশি সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানি থেকে ৭ লাখ টন অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) গ্রেডের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনা হচ্ছে। এর দাম পড়বে ৬ হাজার ২৫ কোটি টাকা।

এছাড়া ১০ হাজার ৭১০ কোটি টাকার পরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনারও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে ইউনিপেক সিঙ্গাপুর প্রাইভেট, ভিটোল এশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড।

১.৩০ লাখ টন সার

সৌদি আরব, রাশিয়া ও মরক্কো থেকে ১.৩০ লাখ টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার, ৩০ হাজার টন এমওপি সার, ৪০ হাজার টন ডিএপি সার ও ৩০ হাজার টন টিএসপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৬০.৭৭ কোটি টাকা।

সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৩.২৪ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৩৪২.৩৩ ডলার।

রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন থেকে আমদানি হবে ৩০ হাজার টন এমওপি সার। এতে ব্যয় হবে ১০৪.৩৯ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ২৮৯.৭৫ ডলার।

মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে আমদানি করা হবে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার। এ সার কিনতে ব্যয় হবে ২৮০.৬৮ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৫৮৪.৭৫ ডলার।

ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি করতে ব্যয় হবে ১৫২.৪৬ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৪২৩.৫০ ডলার।

এর বাইরে স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি।

সূত্র: টিবিএস