প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতল বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত ১০ম এশিয়া কাপ আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়া বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল এই গৌরব অর্জন করে। রোববার ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ২৪.৫ ওভারে স্রেফ ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল। ২০১৯ সালের আসরে রানার্স-আপ হওয়া ছিল বাংলাদেশের এত দিনের সেরা সাফল্য।
এই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের যুবারা তাও আবার রেকর্ড গড়ে। যুব এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। আগেরটি ছিল ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের, পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৬ রানে জিতেছিল তারা।
এশিয়াকাপে এর আগের নয় আসরের আটটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। এরমধ্যে একবার পাকিস্তানের সঙ্গে শিরোপা ভাগাভাগি করে তারা। অপর একটিতে চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তান। এ আসরে আটবার খেললেও এতদিন তেমন কোনো সাফল্য ছিল না বাংলাদেশের। সর্বোচ্চ সাফল্য বলতে গেলে ২০১৯ সালে ফাইনাল খেলা। সেবার ফাইনালে ভারতের কাছে ৫ রানে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাদের।
এটি ছিল যুব এশিয়া কাপের দশম আসর। বাংলাদেশের জয়ের মূল নায়ক ছিলেন দারুণ পারফরমেন্সে থাকা ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি। তিনি এক দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে জয়ের পথ মসৃণ করেন।। তার সঙ্গে জ্বলে ওঠে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলামের ব্যাটও। দুইজনই পেয়েছেন ফিফটি। তাতে আমিরাতকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। এরপর বল হাতে তিন পেসার মারুফ মৃধা, রহনত দৌল্লা বর্ষণ ও ইকবাল হোসেন ইমনের তোপে একশ রানও করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় সুসংবাদ। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে জাতীয় দল দারুণ সমালোচিত হচ্ছে। জাতীয় দল এবং দলের সঙ্গে কয়েকজন খেলোয়াড়ও নিন্দিত হয়েছেন। ভবিষ্যতে অনূর্ধ্ব- ১৯ এর ভালো খেলোয়াড়েরা এসে দলের শক্তি বৃদ্ধি করবে তাতে সন্দেহ নেই।
সেসঙ্গে আরেকটি বাস্তবতা সামনে উপস্থিত হলো তা হচ্ছে প্রতিনিয়ত খেলোয়াড় গড়ে তোলা। সারাদেশ থেকে ছেঁকে আনা অনূর্ধ্ব ১৭, অনূর্ধ্ব ১৯-এর মতো দল থেকে আমরা জাতীয় দলের জন্য চৌকস খেলোয়াড় তুলে আনতে পারি। আর সেসব দল গড়ে তোলার জন্য বিভাগ থেকে জেলা, জেলা থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন।
ক্রিকেট বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্মান এনে দিয়েছে। আমাদের দেশে খেলার জন্য যথেষ্ট সুযোগ নেই। কাজেই আমাদেরও উচিত ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখা এবং এর উন্নয়নের সকল ধরনের প্রচেষ্টা জারি রাখা। সম্ভব হলে প্রতিটি উপজেলায় ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তুলো নবীনদের খেলাধুলার সুযোগ করে দেওয়া।