শরিকদের সাতটির বেশি আসন দেওয়া হবে না
সুপ্রভাত ডেস্ক
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকরা নাখোশ হলেও একে ‘সবার জন্য সুযোগ’ হিসেবে দেখার পরামর্শ দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এবার ‘কারও ব্যাপারে কোনো বাধা নেই।’
একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শরিকদের ১৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হলেও এবার তা কমিয়ে ৭টি করা হয়েছে। বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকা বিকল্পধারা ও তরীকত ফেডারেশনকে ছাড় দেয়নি ক্ষমতাসীন দল। খবর বিডিনিউজের।
৪ ডিসেম্বর শরিকদের দেন-দরবার শুরুর পরে থেকে বৃহস্পতিবার আসনের বণ্টনের সিদ্ধান্ত জানানো হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
সাতটি আসনের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদকে তিনটি করে এবং জাতীয় পার্টি-জেপিকে দেওয়া হয়েছে একটি আসন।
তবে শরিকদের আসন কমানোর সিদ্ধান্তকে ‘বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান’ করার কথা বলেছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
নির্বাচনে তিনি শরিকদের জন্য আসন বাড়ানোর কথা বলেছেন। ছাড় দেওয়া আসনে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা যেন স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকেন, সেটিও নিশ্চিত করতে বলেছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করার দাবি জানিয়েছেন ইনু।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন শরিক দলের যত নেতা আছেন., তারা যার যার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অংশ নিতে পারেন। জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে।
‘১৪ দলে কিছু নৌকা মার্কা দেব। এরইমধ্যে আমি ১৪ দলের সমন্বয়ককে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। নির্বাচন তারা সবাই করুক, তাদের দলের প্রতীক নিয়ে, সাতটা নির্বাচন এলাকা আমরা নৌকার ছাড় দিতে পারব। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকালই আমরা জানিয়ে দিয়েছি।’
ইনুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি গত দুইবারের মত কুষ্টিয়া-২ আসনে নৌকা পাচ্ছেন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ঢাকা-৮ এর বদলে বরিশাল-৩ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাকে রাজশাহী-২ এবং মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে এবারও সাতক্ষীরা-১ আসন দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
রেজাউল করিম তানসেনকে বগুড়া-৪ আসন দিতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ। আর জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দেওয়া হচ্ছে তার পিরোজপুর-২ আসন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। সবাই শুধু বিভিন্ন দলের সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলেন। এই সময়টাকে আমরা যতটা রাজনৈতিক মূল্য দিচ্ছি, আসনের ব্যাপারটা কম। মুখ্য হচ্ছে রাজনীতি। একটা সমঝোতা, একটা রাজনীতি।
‘১৪ দলের শরিকদের আরও দল আছে। ১৪ দল তো এক দল আর দুই দল না। তাদেরকে তো বুঝাইতে হবে। এটা নেতৃস্থানীয় যারা, তাদের কথা সুর যা হওয়া উচিত, সেটাই হচ্ছে। যা হবার হয়েছে। এর বাইরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না।’
কাদের বলেন, ‘আমাদের দলীয় প্রার্থীরাও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন করবে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, প্রতিযোগিতা হবে। স্বতন্ত্র নির্বাচনে জিতলে জিতবে। আমরা জোর করে কারও বিজয় ছিনিয়ে আনব না।
‘আমরা কাউকে বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমারও বিজয়ের গ্যারান্টি নেই। আমাকেও চারজনের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। যদি তাদের মধ্যে কেউ জিতে যায়, আমাদেরকে আমাকে মানতে হবে। এখানে হার-জিতের প্রশ্ন হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’