আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান কেড়ে নেবে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্ভবত সামগ্রিক বৈষম্যের পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে বলেও মনে করেন আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিলিনা জর্জেভা।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পেছনে তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থই বিশাল ভূমিকা রেখেছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে রপ্তানিযোগ্য পণ্যও তেমন নেই। এটা টেকসই অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। এখন এআই-এর মতো প্রযুক্তি বড় হুমকি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশসহ জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য।
এ কারণে নীতিনির্ধারকদের ‘প্রযুক্তিকে আরও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করা থেকে প্রতিহত করতে সংকটজনক এই প্রবণতা’ মোকাবেলা করা উচিত বলেও মনে করা হচ্ছে। এআই এর বিস্তারে কী কী সুবিধা হতে পারে তার পাশাপাশি কী কী ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও আলোকপাত করা তাই জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইএমএফ এর এই বিশ্লেষণ এমন একটি সময়ে প্রকাশ পেলো যখন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে অংশ নিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে জড়ো হয়েছেন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা। ওই ফোরামে আলোচনার একটি বিষয় এআই। বিশেষ করে যখন চ্যাটজিপিটি-র মত এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অন্যদিকে নানা দেশ এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করছে। গত মাসে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এআই ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বের প্রথম বিস্তৃত আইন প্রণয়নের বিষয়ে একটি অস্থায়ী চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘এআই অ্যাক্ট’ প্রস্তাব। যে প্রস্তাবের ওপর এ বছরের শুরুর দিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভোট হতে পারে। তবে যে আইনই হোক সেটা অন্তত ২০২৫ সালের আগে কার্যকর হবে না। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং চীনও তাদের নিজস্ব এআই নির্দেশনা প্রকাশ করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণের একটি পথও বাতলে দিয়েছেন আইএমএফ কর্মকর্তা জর্জেভা। তিনি বলেছেন, তাই রাষ্ট্রগুলোর জন্য ব্যাপক সামাজিক নিরাপত্তা জাল প্রতিষ্ঠা করা এবং দুর্বল কর্মীদের জন্য পুনরায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি করার মাধ্যমে আমরা এআই-এর রূপান্তরকে আমাদের জীবনের সঙ্গে আরও অন্তর্ভুক্ত করতে পারি এবং তার মাধ্যমে মানুষের জীবিকা রক্ষা করতে এবং বৈষম্য রোধ করতে পারি।
এ মুহূর্তের সংবাদ