ইরানের বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের খোঁজ মিলেছে তবে প্রাণের চিহ্ন নেই

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজেন একটি বাঁধের উদ্ধোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।

সুপ্রভাত ডেস্ক »

ইরানে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের খোঁজ পাওয়া গেলো। সরকারি টিভি জানিয়েছে, প্রাণের চিহ্ন নেই।

ইরানের সরকারি টিভি জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনার জায়গায় পৌঁছে গেছে। কিন্তু সেখানে প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই।  এখনো পর্যন্ত জীবীত কাউকে পাওয়া যায়নি।

ইরানের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবাই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সামবার সকালে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়, সেখানে প্রাণের কোনো চিহ্ন তারা পাননি।

রাশিয়ার উদ্ধারকারী দল

প্রেসিডেন্ট রাইসির খোঁজ করার জন্য রাশিয়াও একটি উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে বলে সরকারি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে।

এই দলে ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারী আছেন। এছাড়া একটি হেলিকপ্টার এবং সব ধরনের জায়গায় যেতে পারে এমন কিছু গাড়িও পাঠানো হয়েছে।

বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সব জিনিস নিয়ে উদ্ধারকারী দলটিকে ইরানের শহর তাবরিজে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার আগে এখান থেকেই প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টারে উঠেছিলেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থাট জানিয়েছে, উঁচু জায়গায় সবচেয়ে কঠিন উদ্ধারকাজের দক্ষতা এই দলটি তৈরি আছে। আবহাএওয়া একটু ভালো হলে, কুয়াশা কেটে গেলে উদ্ধারকারী দল ইরানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে।

তুরস্কের পাঠানো ড্রোন থেকেও হেলিকপ্টারের খোঁজ চলছে।  সংবাদসংস্থা অ্যানাডোলু জানিয়েছে, ড্রোনটি থেকে একটি পাহাড়ের গায়ে কালো অংশ দেখতে পেয়েছে। অনেক উঁচু থেকে রাতে তোলা ড্রোনের ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।

কী হয়েছিল?

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আব্দুল্লাহিয়ান ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও ছিলেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ইরনা জানিয়েছে, এই হেলিকপ্টারে পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিও ছিলেন।

আজারবাইজান সীমান্তে ইরানের উত্তরাঞ্চলে রোববার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ঠিক কী কারণে এবং কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি।

ইরানের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীদের পাঠানো হয়েছে এবং উদ্ধার তৎপরতা চলছে৷ তবে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজেন একটি বাঁধের উদ্ধোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। সেখান থেকে ফেরার পথে দেশটির উত্তরাঞ্চলের পাবর্ত্য এলাকায় বিমানটি বিপজ্জনক অবতরণ করতে বাধ্য হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ওয়াহিদি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার রোববার ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ বা বিপজ্জনকভাবে  অবতরণ করেছে।

ঘটনার পর অন্তত ৪০টি উদ্ধারকারী দল এবং ড্রোন পাঠানো হয়েছে।

ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘মহামান্য প্রেসিডেন্ট এবং তার সঙ্গীরা বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টারে করে দেশে ফিরছিলেন৷পথে খারাপ আবহাওয়া এবং কুয়াশার কারণে একটি হেলিকপ্টার হার্ড ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয়।”

সূত্র: ডয়চে ভেলে