সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন আগেই। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। এবার ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের পথচলাও থামিয়ে দিলেন ২২ গজের অন্যতম সেরা পেসার। আজ (মঙ্গলবার) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেও বিদায় বলেছেন তিনি। ফলে ২২ গজে আর বল হাতে দেখা যাবে না মালিঙ্গাকে।
‘অদ্ভুত’ বোলিং অ্যাকশনের কারণে ক্রিকেট বিশ্বের নজরে পড়তে সময় লাগেনি মালিঙ্গার। তার বিশেষত্ব যে শুধু অ্যাকশনে নয়, বোলিং কার্যকারিতাতেও, সেটি বুঝে উঠতে সময় লাগেনি। বিশেষ করে তার বিষাক্ত ইয়র্কার ক্রিকেট ইতিহাসে আলাদা জায়গা করে নেয়। ডেথ ওভারে ডানহাতি পেসারের ভ্যারিয়েশন তরুণ ক্রিকেটারদের আদর্শ হয়ে থাকবে যুগ যুগ। কিন্তু মালিঙ্গাকে আর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে দেখা যাবে না। ইতি চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন ক্রিকেট ক্যারিয়ারের।
নিজের নতুন ইউটিউব চ্যানেলে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন মালিঙ্গা। একমাত্র ফরম্যাট হিসেবে এতদিন কুড়ি ওভার খেলা এই পেসার সেটিকেও বিদায় বলে দেওয়ায় ৩৮ বছর বয়সে ‘সাবেক’ হয়ে গেলেন তিনি। অবসরের ঘোষণায় মালিঙ্গা বলেছেন, ‘আজ আমি আমার টি-টোয়েন্টির জুতা জোড়াকে পুরোপুরি বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার টি-টোয়েন্টি যাত্রায় যারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন এবং আমার ভালো কামনা করেছেন, তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
এ বছরের আইপিএল শুরুর আগে ভারতীয় টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মালিঙ্গা। তাছাড়া আরও কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে নাম প্রত্যাহার করেন। বিদায়ের সুর আগে থেকে শোনা গেলেও তার ভক্তরা আশায় ছিলেন অন্তত বিদায়ী ম্যাচ পাওয়া যাবে। কিন্তু মালিঙ্গার চাওয়া ছিল ভিন্ন। মাঠের বাইরে থেকেই ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মালিঙ্গা। শ্রীলঙ্কার জার্সিতে ১০৭ উইকেট নেওয়া সাবেক অধিনায়ক কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ২৯৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৩৯০ উইকেট। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পা রেখে সবশেষ জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন ২০২০ সালে। দীর্ঘ এই ভ্রমণে ২০০৯ ও ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লঙ্কানদের ফাইনাল খেলার পথে হয়েছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ২০১৪ সালে দ্বীপ দেশটির বিশ্বকাপ জেতার পথে অধিনায়ক ছিলেন তিনিই।
বিশ্বের প্রায় সব বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিযোগিতায় খেলেছেন মালিঙ্গা। আইপিএলের নিয়মিত মুখ এই পেসার নিয়েছেন ১৭০ উইকেট। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তার ইয়র্কার-স্লোয়ার-ভ্যারিয়েশন ছিল অনন্য।
টেস্ট ক্রিকেটের পথচলা শেষ হয়েছে তার অনেক আগেই। ২০১০ সালের আগস্টে সবশেষ লাল বলের ক্রিকেট খেলেছিলেন। মাত্র ৩০ টেস্ট খেলা মালিঙ্গার শিকার ১০১ উইকেট। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দেন তিনি। বর্ণিল যাত্রায় ২২৬ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৩৩৮ উইকেট।