সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। চলতি মাসেই এটি স্বাক্ষরিত হলে প্রায় তিন বছর পর বাংলাদেশ থেকে সব খাতেই কর্মী নিয়োগের পথ উন্মুক্ত হবে।
দেশটির মন্ত্রীপরিষদে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ সাক্ষরের সিদ্ধান্তের পর দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক রেসি এম সারাভানান গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ঢাকায় সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কোন মন্তব্য করেনি।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন যে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত সম্বলিত কূটনৈতিক নোট হাতে পাওয়ার আগে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী নন।
তবে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান এক বিবৃতিতে বলেছেন যে তার দেশের মন্ত্রিসভা তাকে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের অনুমতি দিয়েছে।
“এমওইউ স্বাক্ষরের পরপরই বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ শুরু হবে এবং কেবিনেট এবার সব খাতেই বিদেশী কর্মী নিয়োগে সম্মত হয়েছে যার মধ্যে আছে বৃক্ষরোপণ, কৃষি, নির্মাণ, সেবা, খনি ও গৃহকর্মসহ আরও কয়েকটি খাত”।
এছাড়া নিয়োগকর্তার ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে মন্ত্রিসভা আগামী পহেলা জানুয়ারি থেকে বহু-স্তরীয় লেভি বাস্তবায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য প্রায় দু’বছর সব বিদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছিলো মালয়েশিয়া।
তবে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ আছে প্রায় তিন বছর ধরে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী সাংবাদিক আহমেদুল কবির বলছেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট বাণিজ্য বন্ধ করে মাহাথির মোহাম্মদের সরকার কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছিলো। এ নিয়ে গত কিছুদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছিলো।
“শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগে রাজী হওয়ায় বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য অচলাবস্থার অবসান হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো,” – বিবিসিকে বলছিলেন তিনি।
মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগের বিষয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছিলো ১৯৯২ সালে। কিন্তু কয়েক বছর চলার পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর ২০০৬ সালে আবার কর্মী প্রেরণ শুরু করে বাংলাদেশ কিন্তু বিপুল সংখ্যক অবৈধ বাংলাদেশী ধরা পড়ার পর ২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করা হয়।
এরপর আবার দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পর ২০১২ সালে নতুন চুক্তি হয় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে। কিন্তু কর্মী প্রেরণে সিন্ডিকেটের দৌরাত্মসহ নানা অভিযোগে ২০১৮ সালে সেটি বন্ধ করে মাহাথির মোহাম্মদের সরকার।
এর তিন বছর পর এখন আবার বাংলাদেশী শ্রমিকদের মালয়েশিয়া যাওয়ার পর উন্মুক্ত হবে – যদি শেষ পর্যন্ত দেশটির মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সূত্র : বিবিসি বাংলা