‘পৃথিবীর কোথাও এক লাফে এত জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নজির নেই। কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে সরকার ভর্তুকি দিয়ে দেশের রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে। দেশটাকে আওয়ামী লীগ দেউলিয়া করে দিয়েছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির সমাবেশ ছিল ৭ নম্বর বিপদ সংকেত। আর চট্টগ্রামের সমাবেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত। আওয়ামী লীগের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। তারা ১৯৭৫ সালেও গণতন্ত্র হত্যা করে মনে করেছিল সারাজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকবে। কিন্তু পারেনি। জনরোষের মুখে সরকারের পতন হয়েছে।’
শুক্রবার বিকেলে নগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এসব কথা বলেন।
কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এ সমাবেশ হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে সমাবেশস্থল নাসিমন ভবনের মাঠ পূর্ণ হয়ে কাজীর দেউরী মোড় থেকে লাভ লেইন পর্যন্ত পুরো নুর আহম্মদ সড়কে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
এ সময় মীর নাছির বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী গত ৭ বছরে দেশ থেকে ২৭০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব আছে ২৩৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার। বাকি ৩০ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার কোথায় গেল? আজকে জাতি এটা জানতে চায়। এটা একটা বিরাট শুভংকরের ফাঁকি, বিরাট ডাকাতি, বিরাট লুটের একটা চিত্র।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সরকার নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরকার। বাহিনীর আশ্রয়ে তারা টিকে আছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তাদের রাস্তায় নামতে দেবে না। রাস্তায় নামলে জনগণ তাদের লাঠিপেটা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকের জ্বালানি সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, বিদ্যুতের লোডশেডিং, বিদ্যুতের সংকট সবকিছুর মূলে এই সরকারের দুর্নীতি। চুরি ও লুট করে সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।
বর্তমান সরকার টিকেই আছে মানুষকে প্রতারণা করে এমন মন্তব্য করে ডা. শাহাদাত বলেন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। তাদের নিজস্ব লোকজনকে মুনাফা পাইয়ে দিয়েছে। আজকে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট, বাংলাদেশ যে দেউলিয়াত্বের দিকে যাচ্ছে, তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী এই আওয়ামী লীগ সরকার। এর জবাব তাদের দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও পেট্রোলিয়াম করপোরেশন দাম না কমিয়ে পাঁচ বছর ধরে লাভ করেছে। এতে তাদের লাভ ছিল প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। সেই মুনাফা তারা কী করেছে?
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, বাজারে গিয়ে আলু চাল কিনতে পারছে না, তখন জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়িয়ে দেওয়া অমানবিক ও নিষ্ঠুরতা। বর্তমান সরকার জেনেশুনে দেশকে ধ্বংস করেছে। সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। একটি সরকারের যখন কোনো জবাবদিহি থাকে না, জনগণের সামনে দাঁড়াতে হয় না, তখন মানুষের কী হলো না হলো, মানুষ মরল কি বাঁচল, এটা তাদের কাছে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না।
নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহ আলমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মাহবুব আলম, ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, নাজিম উদ্দীন আহমেদ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলা দলরে মনোয়ারা বেগম মনি, জেলি চৌধুরী, শ্রমিক দলের শেখ নুর উল্লাহ বাহার, শামসুল আলম (ডক), থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী বাবুল হক, হাজী মো. সালাউদ্দীন, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, আবদুস সাত্তার সেলিম, মো. সেকান্দর, হাজী হানিফ সওদাগর, আবদুল্লাহ আল হারুন, সরফরাজ কাদের রাসেল, ডা. নুরুল আবছার, এম আই চৌধুরী মামুন, থানা সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জাহিদ হাসান, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মাঈনুউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, আবদুল কাদের জসিম, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, নুর হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহীন, জাসাসের আহ্বায়ক এম এ মুছা বাবলু, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ শিপন, কৃষক দলের আহ্বায়ক মো. আলমগীর, সদস্য সচিব কামাল পাশা নিজামী, মৎসজীবী দলের আহ্বায়ক হাজী নরুল হক, তাঁতী দলের আহ্বায়ক মনিরুজ্জমান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জমান মুরাদসহ মহানগরীর ৪৩টি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগদান করেন। বিজ্ঞপ্তি