জয়নুল আবেদীন ♦ (অতিরিক্ত ডিআইজি) ডিসি ট্রাফিক (উত্তর) সিএমপি »
সুপ্রভাত : আপনারা ব্যাটারি চালিত রিকশা আটক করে কিছু জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দিচ্ছেন, আবার তারা রাস্তায় নামছে। কিন্তু এগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণে এছাড়া কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় কি-না।
জয়নুল : এগুলো আটকের পর আমাদের ড্যামেজের কোনো বিধান নাই। এব্যাপারে কর্পোরেশন অথবা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা নিতে পারে। কারণ আমাদের আইনে বলা আছে, জরিমানা প্রদান করলে এসব যান অবমুক্ত করা যাবে। ফলে জরিমানা দিয়ে তারা আবার রাস্তায় বেরিয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে যারা সড়কে যান চলাচলের অনুমতি দেয় সেই প্রতিষ্ঠান বিআরটিকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার মতো ম্যাজিট্রেট রয়েছে সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে। আমাদের তা নেই। আমাদের পক্ষ থেকে বিআরটিকে অনেকবার বলা হয়েছে আমাদের সহযোগিতা ভিত্তিতে যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে
ব্যাটারি রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে। এভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যাটারির রিকশা মালিককে নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদের শাস্তি প্রদান করা হলে সেটির একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সুপ্রভাত : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরে ব্যাটারি রিকশার মতো শহরে অবাধে গ্রাম গাড়ি চলাচলের অভিযোগ পাওয়া যায়, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কি ?
জয়নুল : এ ধরনের কোনো অভিযোগের কথা আমার জানা নাই। তবে গ্রাম গাড়ি প্রতিদিন আটক হচ্ছে, প্রতিদিন প্রসিকিউশন দেওয়া হচ্ছে। কাপ্তাই রাস্তার মাথায় যে পরিমাণ গাড়ি আছে, সেগুলো সব কি আটক করা যাবে, আটক করে রাখার মতো কোনো জায়গা আছে?
সুপ্রভাত : নগরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিরাপদ চলাচলের জন্যে ফুটওভার ব্রিজ জরুরি হয়ে পড়েছে, এ ব্যাপারে আপনাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে কিছু বলবেন?
জয়নুল : চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার সমস্যা ও সমাধানের ওপর একটা রিসার্চ (গবেষণা) করেছে সিএমপি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ আমিও এ দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত ছিলাম। গবেষণায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় কোথায় ফুটওভার ব্রিজ বসবে এবং কোন ডিজাইনের হবে এগুলো। আমার জানা মতে, পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে এ গবেষণাপত্রের কপি এর স্টেকহোল্ডার হিসেবে সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএর কাছে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটির কাজ শুরু হয়েছে। এ সময়ে সিটি কর্পোরেশনে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও জানিয়ে দেওয়া হয়।
সুপ্রভাত : আপনারা নগরীর বিভিন্ন স্থানে পার্কিং স্পেস নির্ধারণের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়ে যানবাহনের যাত্রী ওঠানামার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো সেভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।
জয়নুল :পার্কিং স্পেস নির্ধারণ করা কি ট্রাফিকের কাজ ? আমাদের কাজ হচ্ছে রাস্তার মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা। কেউ যদি আইন অমান্য করে তাকে ট্রাফিক আইনে প্রসিকিউশন দেওয়া। রাস্তার মালিক হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। রাস্তায় কোথায় গাড়ি দাঁড়াবে, কোথায় পার্কিং হবে, কোথায় জেব্রা ক্রসিং হবে এটা সম্পূর্ণ সিটি কর্পোরেশনের ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা)। তারপরও আমরা মানুষের সুবিধার্থে, নিজেদের কাজের সুবিধার্থে এসব কাজ করেছি। কিন্তু দিনশেষে দেখা যায়, সবাই নিয়ম মানছে না। মামলা দেওয়া হলেও তারা (যানবাহন চালক) নিয়ম মানতে চায়না। আইন মানার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ও সচেতন হতে হবে।
সুপ্রভাত : নগরীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ডিজিটাল হচ্ছে না কেনো?
জয়নুল : সিগনাল বাতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের।
সুপ্রভাত : অভিযোগ রয়েছে, নগরীতে চলাচলরত ব্যক্তি মালিকানাধীন বাসের মালিকেরা তাদের গাড়ি নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে বাস চালকের জিম্মায় ছেড়ে দেন। আর সে কারণে চালকেরা তাদের ইনকাম (আয়) বাড়ানোর তাগিদে দীর্ঘসময় সড়কে অবস্থান নিয়ে যানজট তৈরি করে। এক্ষেত্রে আপনাদের পদক্ষেপ কি?
জয়নুল : আমি মনে করি, যাত্রীবাহী বাসগুলো কোম্পানি ফরমেটে চলাচল করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কারণ সবগুলো গাড়ি একচি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকবে। চালকেরা তখন কোম্পানি থেকে নির্দিষ্ট অংকের ভাতা পেলে এভাবে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতায় নামবে না।