অবৈধ হাসপাতাল-ল্যাবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক

পত্রিকান্তরে জানা গেল, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র অনুমোদনহীন বা নিবন্ধিত না হয়েই দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের তালিকায় দেখা যায়, ১১৮টি হাসপাতাল ও ১২২টি রোগ নির্ণয়কেন্দ্রকে অননুমোদিত বা অনিবন্ধিত হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে। ১১ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে কুমিল্লায়। জেলাটিতে ৭২টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ৬৫টি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র অনিবন্ধিত।
কুমিল্লার পরই কক্সবাজার জেলায় আছে ২৩টি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে হাসপাতাল ১০টি। চট্টগ্রাম জেলায় অনিবন্ধিত হাসপাতাল ৬টি ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র ১১টি। এ ছাড়া চাঁদপুরে ৫টি হাসপাতাল ও ১০টি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র অননুমোদিত বলে জানা গেছে। অন্যান্য জেলার অনিবন্ধিত হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রের মধ্যে নোয়াখালীতে ১৫টি, ফেনীতে ২টি, চাঁদপুরে ১৫টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৮টি, লক্ষ্মীপুরে ১৬টি প্রতিষ্ঠান অনিবন্ধিত তালিকায় রয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার পর শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জানুয়ারি সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রের তালিকা এক মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। এরপর তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়।
চট্টগ্রাম নগরের বন্দরটিলা ন্যাশনাল চক্ষু হাসপাতালটি প্রায় ১০ বছর ধরে অনুমোদনহীনভাবে চলে আসছে। এখানে চিকিৎসকের সহকারীদের দিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ অনেক পুরোনো। এবার প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার তালিকায় রাখা হয়েছে। এতদিন এই প্রতিষ্ঠানটি চলল কী করে সেটাই ভাববার বিষয়।
আমরা বুঝতে পারছি না প্রকাশ্যে বড় বড় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিনের পর দিন এমন অবৈধ হাসপাতাল ও ল্যাব চালু রাখা সম্ভব হলো কী করে? এসব দেখভালের কি কোনো কর্তৃপক্ষ নেই? জনস্বাস্থ্য নিয়ে এমন হেলাফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। উচ্চ আদালত আদেশ না দিলে স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো গা করতো না তাহলে? নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বলেছিলেন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি একজন নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক। তাঁর কর্মের পুরস্কার স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী তাঁকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা আশা করব তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে এই মন্ত্রণালয় অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত হয়ে দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার প্রসার ঘটাবে।