নিজস্ব প্রতিবেদক »
পাহাড়গুলো রক্ষায় অবৈধ বসতিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির মতো সকল সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। পাশাপাশি তিনি অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করতে বলেছেন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পাহাড়ে ৬ হাজার ৫৫৮টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে ২৬টি পাহাড়ে বসবাস করছে। তারমধ্যে দেখা যাচ্ছে ১৬টি সরকারি সংস্থার ও ১০টি বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড়। অবৈধভাবে পাহাড় দখল করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করা হবে।’
আর কোনো পাহাড়ে নতুন করে যেন কেউ কোনো স্থাপনা তৈরি করেতে না পারে। আর তৈরি করলে সংশ্লিষ্ট অথোরিটির কাছ থেকে যেন সার্টিফিকেট বা অনুমতি নেয়। নিজস্ব মালিকানায় পাহাড়েও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় কাউকে বসবাস করতে দেয়া হবে না। এছাড়া কেউ যেন ভাড়াও দিতে না পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ফয়’স লেক এলাকায় অনেক বস্তিবাসী আছে। এ জায়গায় রেলওয়ের। সেখানে রেলওয়ের অনুমতি না নিয়ে চসিকের থেকে অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন ডেভেলমেন্ট প্রজেক্ট নেওয়া হচ্ছে। সেই প্রজেক্টের কারণে পাহাড় কাটা যাচ্ছে। এতে পাহাড়ের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু যেই প্রজেক্ট হোক, যার জায়গায় প্রজেক্ট হোক; সংশ্লিষ্ট অথোরিটির অনুমতি নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
পাহাড়ে সেবা সংযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘যে সকল জায়গায় অবৈধ দখল থাকে, সে সকল বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ পায় কিভাবে? কেননা বিদ্যুৎ পেতে হলে মালিকানার কাগজপত্র দেখাতে হয়। শুধু বিদ্যুৎ নয়, গ্যাস ও পানির লাইনও সংযোগ পায় সেখানে। এসব অবৈধ লাইনের কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী কেবল সংযোগ দেওয়া ব্যক্তিরা। নতুন করে কেউ যেন আর ঝুকিপূর্ণ পাহাড়ে স্থাপনা করতে না পারে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আর যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং সেখানে যেসব বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ রয়েছে তার তালিকা করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
কাউন্সিলর জসীমের পাহাড় দখল ও কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ আইনে সকল অন্যায়কারীকে সমান বিধানে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সকল দ-ই জামিনযোগ্য। ওটা সংশোধন করাটা জাতীয় পর্যায়ের বিষয়। কাউন্সিলর জসীম আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসার কারণে ওটা নিয়ে কিছু বলার এখতিয়ার নেই।’
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভার প্রথমবারের মতো সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামের ডিআইজি নুরুল আলম মিনার, চট্টগ্রাম মহানগর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।