মজনু মিয়া
শরীর-গতর ভালো, বয়স ত্রিশ বা পঁয়ত্রিশ হবে। বিয়ে করেছেন, কিন্তু মনে সুখশান্তি নেই! কারণ, বিয়ের পর একটা মেয়ের শারীরিক ও মানসিক চাহিদাপূরণ করা পুরুষের দরকার। পুরুষটি চেষ্টা করে, কিন্তু তার সে চেষ্টা কোনো কাজে আসে না! নারীর কাছে গেলে নারীর মানসিক চাহিদা পূরণ করতে করতে তার শারিরীক চাহিদা পূরণ না হলে তার মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি আরও খারাপ হয়।
পুরুষের আর্থিক অবস্থা ভালো, চিকিৎসা করবার চেষ্টা করলো নারীসহ গিয়ে কিন্তু তাতে কোনো ভালো ফল হলো না! পুরুষটি অক্ষমতায় নারীর সাথে আর মাথা উঁচু করে কথা বলে না।
বেশ কিছুদিন চলে গেল, নারীর মন ছটফট করতে থাকে, তার সংসার-স্বামী ভালো লাগে না। নারী একা একা যেখানে-সেখানে যেতে লাগলো কিন্তু পুরুষ রাগ করে বা ধমক দিয়ে কথা বলে না! কারণ, সে নারীর কাছে দুর্বল!
পাশের গাঁয়ের গরিব একটা ছেলেকে নারীর ভালো লেগে গেলো। কথা হয়, দেখা হয়, এমনি করে একদিন শারীরিক চাহিদাপূরণ করবার জন্য ডেকে নিলো। নারীর শারীরিক চাহিদাপূরণ হলো।
পুরুষের পাশে এসে নারী শুয়ে থাকে। নারী মনে করে পুরুষ এসব জানে না। কিন্তু পুরুষ সব জানে, কিছু বলে না। কারণ, যদি তাকে ছেড়ে নারী চলে যায়! এমনি করে অনেকদিন গত হলো। পুরুষটা মাথা উঁচু করে কথাও বলে না! কোনো কাজের কথাও নারীকে বলে না।
এ কথা নারীর এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর সাথে আলাপ করলে বান্ধবী অবাক হলো। তারপর আর একদিন বান্ধবীর সাথে কথা হচ্ছে।এমন সময় বান্ধবী বললো, এসব তোর স্বামী জানে না? তখন নারী বললো, মনে হয় জানে! তোর কাপড় আনুষঙ্গিক খরচাপাতি স্বামী বহন করে? নারী বলে, হ্যাঁ, বহন করে। তোকে একটা কথা বলি। আজ রাতে তোর প্রেমিককে আসতে বলবি। তোর শারীরিক চাহিদা মেটানোর পর তুই বাসায় গিয়ে তোর স্বামী ঘুমে কিনা তা দেখার জন্য তার মুখ ঘুরিয়ে দেখবি!
কথা মতো, নারী তার শারীরিক চাহিদা মেটানোর পর বাসায় গিয়ে স্বামীর মুখ হঠাৎ করে ঘুরিয়ে দেখে স্বামী কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছে! নারী অবাক হয়ে আর কোনো কথা বলতে পারল না!
বান্ধবীর সাথে আবার কথা বলতে গিয়ে বললো, বাসায় গিয়ে দেখি কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছে। তখন বান্ধবী বললো, প্রেমিক তো অনেক মজা লুটল, এবার তুই প্রেমিকের কাছে পাঁচ হাজার টাকা চেয়ে দেখ সে কি বলে!
কথা মতো নারী পাঁচ হাজার টাকা চাইল। কিন্তু প্রেমিক কোনো সাড়া দিল না! বলা ভালো, টাকার তো আর নারীর দরকার না! প্রেমিকের মন-মানসিকতার দিক আর নারীর কাছে সে কি চায়, সেদিক বিচার করার জন্য টাকাটা চাওয়া হলো। এবার বান্ধবী বললো, দেখ, শারীরিক সুখ সব কিছু না! মানসিক সুখও দরকার। নারী বান্ধবীর কথা বুঝলো।
তারপর প্রেমিককে ডাকলো, আজ রাতে আসো। প্রেমিক আসলো ঠিকই, এবার নারী বললো, দেখ মানুষের লোভ-লালসা আছে ঠিকই। কিন্তু আমার মধ্যে বেঈমানি নেই। কারণ, আমি শারীরিক সুখ পাওয়ার জন্য ফেরেস্তার মতো স্বামীকে কাঁদিয়েছি প্রতি রাতে। তুই তো প্রেমিক নামের বেঈমান! আমি তোর টাকা নিতাম না। আমার স্বামীর টাকার অভাব নেই। টাকা চেয়ে বুঝলাম, তুই মানুষ নামের অমানুষ। নারী প্রেমিককে কুকুরের মতো তাড়িয়ে দিলো! স্বামীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইল। স্বামী কোনো কথা বললো না!
নারী বললো, আমি অপরাধী আমাকে ক্ষমা করো না। তোমার পায়ের কাছে একটু ঠাঁই দাও স্বামী, যাতে অপরাধ থেকে মুক্ত হতে পারি কিছুটা হলেও। আমি নারী বুঝেছি এখন, সৎ স্বামীর বুকে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করতে পারলেও শান্তি। শারীরিক চাহিদাপূরণ ও মানসিক চাহিদা দুয়ে মিলেমিশে মানিয়ে নিয়ে সুচিকিৎসা নিলে আল্লাহ ভালো ফল দেবেন, আশা করি। আমি অপরাধী, চরম অপরাধী। আমার ক্ষমা নেই! তুমি আমায় ক্ষমা করো, স্বামী।