‘ভবনটি ভাঙ্গায় কার লাভ হলো’
ইউএসটিসির ১৮ তলা ভবন ভাঙ্গার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক »
প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান। বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির (ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি) উপাচার্য। প্রকৌশল বিদ্যায় দেশের অন্যতম একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিগণিত। কিন্তু তিনি গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অঝোরে কাঁদলেন! উচ্চশিক্ষার গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে তাঁর এ কান্না। যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ তলার একাডেমিক ভবনের প্রতিটি ফ্লোরের সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট অংশ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভাঙ্গছে। খালের জায়গায় এই ভবন গড়ে তোলা হয়েছে বলে তা ভেঙ্গে ফেলছে সিডিএ।
প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম সিডিএ’র উদ্দেশে প্রশ্ন ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘ভবনটি ২০০২ সালে সিডিএ থেকে অনুমোদন নিয়ে গড়ে উঠেছে। যদি তা খালের উপরে গড়ে উঠে তাহলে এতোদিন বলা হয়নি কেন? জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে ভবনের সীমানা দেয়াল এবং এখন পুরো ভবন ভাঙ্গা হচ্ছে।’
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আরএস শিট অনুযায়ী রেলওয়ে যে জায়গা আমাদের বরাদ্দ দিয়েছে সেখানে খাল মার্কিং করা ছিল না। সেই শিট অনুযায়ী সিডিএ ভবনের অনুমোদন দিয়েছে। রেলওয়ের লিজকৃত এক একর জায়গা থেকে আমরা রাস্তার জন্য আরো কিছু জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। তারপরও যদি সমস্যা হয় তাহলে পাশের জায়গা থেকে নিয়ে খাল করা যেত এবং ভবনটি রক্ষা পেতো। এখন এই ভবনটি ভেঙ্গে কার লাভ হবে? দেশের ছেলেমেয়েরা এবং ৮টি দেশের শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এখানে প্রতিটি ফ্লোরে আধুনিক ল্যাবরেটরি রয়েছে, সেই ল্যাবগুলো তছনছ হয়ে গেছে।’
প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০১৯ সালে প্রথমবার যখন ভবনের সীমানা দেয়াল ভাঙ্গা হয় তখন থেকেই আমরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে আসছি। মীমাংসার পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন থাকা একটি শিক্ষা ভবনকে এভাবে ভেঙ্গে ফেলায় কার ক্ষতি হচ্ছে? ডা. নুরুল ইসলাম তো এই বিশ্ববিদ্যালয় কবরে নিয়ে যাননি এবং উনার ছেলে মেয়েরাও নিবেন না। এই বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ভবন ভাঙ্গার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা দীর্ঘ মানববন্ধন করে।
উল্লেখ্য, জাকির হোসেন রোডে গয়ন্যা ছড়া খাল দখল করে ইউএসটিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লক ডি ভবনটি গড়ে উঠেছে। এজন্য জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের আওতায় খালের উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে গত বুধবার থেকে।