আমার সাক্ষাৎ পাওয়া আপনাদের নাগরিক অধিকার

নগরবাসীর প্রতি চসিক প্রশাসক সুজন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আলহাজ মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমার দুয়ার আপনাদের জন্য সব সময় খোলা। রাজনৈতিক কর্মী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নগরীর অধিবাসীদের আমার কাছে আসার নাগরিক অধিকার রয়েছে। নগরবাসীর সান্নিধ্যে আমি কখনো বিরক্ত হই না।
গতকাল সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পুরোনো নগর ভবনের প্রশাসক দপ্তরে নগরীর বিভিন্ন স্তরের নাগরিক তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক প্রশাসকের নিকট তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। সাক্ষাৎ প্রার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার, লেকসিটি হাউজিং-এর কর্মকর্তাগণ, করপোরেশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সাধারণ নাগরিকও ছিলেন। সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অনেকে চিকিৎসা, বিবাহযোগ্য কন্যার বিয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং করপোরেশনের এক শিক্ষকের শূন্যপদের বিপরীতে চাকরি স্থায়ীকরণ, করপোরেশনের তহবিলে কাছে টাকা জমা করা সত্তে¡ও দোকান বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়ে প্রশাসককে অবহিত করেন। এ সময় প্রশাসক দুস্থ কয়েকজনকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। করপোরেশনের ঠিকাদারদের কয়েকজন তাদের বকেয়া টাকা পাওনা বিষয়ে প্রশাসকের সহযোগিতা চান। সে সময় প্রশাসক দোকান বরাদ্দের বকেয়া টাকার পাওনা বিষয়ে করপোরেশনের ভ‚সম্পত্তি ও হিসাব বিভাগে যোগাযোগ করতে তাদের আবেদনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবরে লিখে দেন।
সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে প্রশাসক আরো বলেন, আমি সাময়িক সময়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে দেখি এক হাজার কোটি টাকার দেনার বোঝা। প্রতিমাসে করপোরেশনকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন খাতে ব্যয় করতে হয় ১৭ কোটি টাকা। ঘাটতি থাকে ৩ কোটি টাকা। এই টাকা পাব কই? অবকাঠামোগত উন্নয়নে টাকা চেয়ে আমি মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছি।
অতীতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এমন অনেক খাতে অর্থব্যয় করেছে যাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নাই। অথচ করপোরেশন তার রুটিন কাজ যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, আলোকায়ন ও নালা-নর্দমা পরিষ্কার, ড্রেনেজ সিস্টেম ও সড়ক মেরামত কাজ স্বাভাবিক রাখতে পারেনি। করপোরেশনের আর্থিক পরিস্থিতি এতোই নাজুক যে, ৬০ বছর চাকরি জীবন শেষে অবসরে গিয়ে ভবিষ্য তহবিলের জন্য করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টেবিলে-টেবিলে ধরনা দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে দেখলাম, করপোরেশনের ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনো তাদের ভবিষ্য তহবিলের টাকা পাননি। এর মধ্যে অনেকে পাওনা টাকা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। প্রশাসক বলেন, আমি মিথ্যা আশ্বাস ও কথার ফুলঝুরি দিয়ে নগরবাসীর সাথে প্রতারণা করতে পারবো না। অনেক কিছুই করার ইচ্ছা আছে আমার। কিন্তু সামর্থ্য নাই। আমার দায়িত্বকালীন সময়ে আমি নগরীকে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব রাখতে সর্বতোভাবে চেষ্টা করবো। তিনি এ ব্যাপারে নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। বিজ্ঞপ্তি