শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা জরুরি

সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্পায়নের বিকল্প নেই। এজন্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতির উন্নয়নের মাধ্যমে এদেশকে উচ্চ আয়ের দেশে নিয়ে যেতে বর্তমান শিল্পবান্ধব সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিল্পনগরী সীতাকু- উপজেলায় ইতোমধ্যে সংঘটিত বেশ কয়েকটি বড় বড় দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এখন থেকে আমরা আর কোন দুর্ঘটনা দেখতে চাই না। ফায়ার সেফটি প্ল্যানসহ শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিল্পায়ন গড়তে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক হতে হবে।

সোমবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রামে অবস্থিত অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ঝুঁকি নিরসন ও নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে অংশীজনদের নিয়ে সার্কিট হাউসে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও জিপিএইচ ইস্পাতের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ডিসি বলেন, সীতাকু-ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন নিয়ে আমরা কর্মসহায়ক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। শিল্পকারখানা গড়তে হলে সবার আগে শ্রমিক, মালিক ও উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। আইন না মেনে ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোন শিল্পকারখানা পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে হবে। নিয়ম-নীতির মধ্যে থেকেই সবাইকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। শিল্পকারখানাগুলোতে নিরাপত্তা নজরদারি বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল খুঁটি শ্রমিক এবং সেই শ্রমিকের নিরাপত্তা, উদ্যোক্তাদের মূলধনের নিরাপত্তা দুটিকেই গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, ৪ মার্চ সীতাকু-ের কদমরসুলে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় আরও অনেকে। এর আট মাস আগে সীতাকু-ের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বড় ধরনের অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে এবং সর্বশেষ ১১ মার্চ ইউনিটেক্স তুলার গুদামে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। সীতাকু-ে প্রতি বছরই দুর্ঘটনা ঘটছে, অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে। যার বেশির ভাগেরই মানবসৃষ্ট, খুব কমই প্রকৃতিগত।

আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন সীতাকু- ও মিরসরাইসহ বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা রোধে আমরা একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে চাই। এর মধ্যে কিভাবে আমরা দুর্ঘটনা হ্রাস করবো, এটি মানবসৃষ্ট হোক আর প্রকৃতিগত হোক, পরিবেশের দূষণ কিভাবে রোধ করবো, দূষণ থেকে খাল-নদী রক্ষা, ভূ-গর্ভস্থ পানি কিভাবে নি¤েœ যাওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে, কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি ও পাহাড় কাটা কিভাবে রোধ করা যাবে, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও মালিকদের মূলধনের নিরাপত্তা আমরা কিভাবে নিশ্চিত করতে পারি। এর পাশাপাশি সীতাকু- এলাকায় কিভাবে আমরা একটি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে পারবো সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। কর্ণফুলী, আনোয়ারা, মিরসরাই, হাটহাজারী এলাকায়ও শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। সে এলাকাগুলো নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রাকিব হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাৎ হোসেন, জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ডিএমডি আলমাস শিমুল, অ্যাডভাইজার কর্নেল (অব.) শওকত ওসমান ও মিডিয়া অ্যাডভাইজার অভীক ওসমান প্রমুখ।