৭৪ প্রতিশ্রুতি দিলেন শাহাদাত

অগ্রাধিকারে রয়েছে জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম গড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগর পিতা নয়, নগরবাসীর সেবক হতে ৭৪ প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোট চেয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। একইসাথে অগ্রাধিকার দিয়েছেন জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে। গতকাল শনিবার নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
ইশতেহার ঘোষণার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী জাফরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
‘চলো সবাই বাঁধো জোট, এবার দেবো আমার ভোট’ স্লোগান নিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নগর পিতা নয়, আমি নগর সেবক হতে চাই। নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া যা কোন নির্দিষ্ট সময়সীমায় লক্ষ্যে পৌঁছার বিষয় নয়। প্রয়োজন আর সময়ের পরিক্রমায় জীবন-মান উন্নততর পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়।
এ সময় তিনি সরকারের কাছে দাবি করেন জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা অবৈধ মেয়র দেখতে চাই না। দখলদারিত্ব বাদ দিয়ে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত মেয়র দেখতে চাই।
একটি পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেয়ার অঙ্গীকার করে ডা. শাহাদাত বলেন, নিরাপদ চট্টগ্রাম, সাম্য-সম্প্রীতির চট্টগ্রাম, জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্য-শিক্ষাবান্ধব, তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ নান্দনিক পর্যটন নগরী গড়তে সকলের কাছে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চাই।
নির্বাচনী ইশতেহারে ৯টি (জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম, স্বাস্থ্যকর চট্টগ্রাম, শিক্ষাবান্ধব চট্টগ্রাম, গৃহকর ও আবাসন, পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম, নিরাপদ চট্টগ্রাম, নান্দনিক পর্যটন নগরী ও তথ্য প্রযুক্তি) প্রধান পয়েন্টের অধীনে ৭৪টি প্রতিশ্রুতি যুক্ত করেন ডা. শাহাদাত। এরমধ্যে সবার আগে জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিতে উল্লেখ করেন, শহরের খালগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারসহ পানি চলাচলের উপযুক্ত করা হবে। কর্ণফুলী নদীর নব্যতা ফিরিয়ে আনতে আধুনিক ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। একইসাথে পাহাড় কাটা বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইশতেহারে স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট স্থাপন, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ওল্ড এজ কেয়ার হোম, কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে নিরাপদ সুপেয় পানির প্রকল্প বাস্তবায়ন করা, মশক নিধনে ওষুধ ছিটানোর পরিবর্তে আধুনিক বিশ্বে প্রচলিত বায়োলজিক্যাল মেথড বাস্তবায়ন করা, শিক্ষা ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, কর্পোরেশন পরিচালিত স্কুলসমূহে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করা, শিক্ষার মান উন্নয়নে এলাকাভিত্তিক গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করা, গৃহকরের প্রয়োজনীয় বিন্যাস ও সরলীকরণ করা, নিম্নআয়ের লোক, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের আবাসন গৃহ করমুক্ত করা, শ্রমজীবী ভাই-বোনদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিতে আবাসন সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া, পরিচ্ছন্ন বিভাগে জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন করা, উন্নত বিশ্বের আদলে আধুনিক প্রযুক্তিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা, নিরাপদ চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে আইটি কমান্ড সেন্টার গড়ে তোলা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ফুটওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করা, উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগ মোকাবেলায় চসিকের অর্থায়নে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা, নগরীর পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো, যানজট নিরসনে বাইপাস সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া, নগরীর দীঘি ও লেক সমূহকে পর্যটন স্পট হিসেবে পরিণত করা, অনলাইন পদ্ধতিতে হোল্ডিং টেক্স, জন্ম-মৃত্যুর সনদ দেয়া, নগর ভবন ও প্রতিটি ওয়ার্ডে অভিযোগ বক্স স্থাপন করাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।