৪৮ বছরেও টেকসই উন্নয়ন হয়নি নাফনদীর বেড়িবাঁধের

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

টেকনাফ উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফনদীর উপকূলীয় এলাকার প্রায় স্লুইচ গেইট অকেজো। স্থানীয় প্রভাবশালীরা লবণ ও চিংড়ি উৎপাদনের স্বার্থে স্লুইচ গেইটগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখায় পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে নিম্মাঞ্চলে বর্ষা মওসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি এবং নাফনদীর প্রতিরক্ষাবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এসব স্লুইচ গেইটের নিয়ন্ত্রক কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। স্বাধীনতার ৪৮ বছর অতিবাহিত হলেও নাফনদীর উপকূলীয় এলাকার প্রতিরক্ষাবাঁধ ও স্লুইচ গেইটের টেকসই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে উপকূলীয় এলাকার মানুষের জানমালের নিরাপত্তার অভাব, বিভিন্ন ক্ষতিসহ চরম ঝুঁকিতে বসবাস করে আসছে।

চিংড়ি চাষ এবং লবণ চাষের নামে বিস্তীর্ণ নাফনদীর উপকূলীয় এলাকার বাইরে ও ভিতরে হাজার হাজার সরকারি খাস জায়গা ভিত্তিহীন পরিবারের নামে বন্দোবস্তি দিয়ে প্রভাবশালীরা দখল করে আছে। সী সাইডে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ রক্ষা এবং সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সবুজ কেউড়া বাগান চিংড়ি ও লবণ চাষের নামে উজাড় হয়ে যায়। ফলে নাফনদীর উপকূল রক্ষাকারী বেড়িবাঁধে  ভাঙন দেখা দেয়।

প্রতিবছর ভাঙন রোধে সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে বেড়িবাঁধ উন্নয়নে স্থায়ী কোন সমাধান হয়নি। বিশেষ করে সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপ উপকূলীয় এলাকার প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ এবং স্লুইচ গেইটের অবস্থা অতি ঝুঁকিপূর্ণ। এ জনপদ প্রতি বছর বর্ষা মওসূমে নিম্মাঞ্চল এবং শাহপরীরদ্বীপের একমাত্র যোগাযোগ সড়কটি পানিতে ডুবে থাকে। দুঃখ দুর্দশায় কেউ এগিয়ে আসছেনা- এমন অভিযোগ শাহপরীর দ্বীপবাসীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবারং ইউনিয়নের কয়েকজন প্রভাবশালী চিংড়ি ও লবণ চাষের নামে ব্যক্তির স্বার্থে নাফনদীর উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ স্লুইচ গেইট বন্ধ রেখে জনস্বার্থ বিরোধী কাজে জড়িত থাকায় নিম্মাঞ্চলে বর্ষা মওসূমে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

অপরদিকে টেকনাফ সদর ও সাবরাং নাফনদীর উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি স্লুইচ গেইট দীর্ঘদিন অকেজো থাকায় নাফনদীর জোয়ারের পানি অবাধে প্রবেশ করে এবং উপকূলীয় এলাকার বসবাসকারীরা জলাবদ্ধতা এবং প্লাবনের শিকার হয়। এছাড়া বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় বিস্তীর্ণ উপকূলীয় সীমান্ত এলাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোরাচালান রোধে এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযান পরিচালনায় বিঘœ ঘটে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর উপ সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেড়িবাঁধের উন্নয়নকাজ চলমান আছে এবং কিছু স্লুইচ গেইট অকেজো থাকলেও ব্যবহারযোগ্য।