১৬ জুন থেকে ২১ দিনের লকডাউন উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে

লকডাউন কার্যকরে সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখছেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে আগামী ১৬ জুন রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে নগরীর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে ২১ দিন ব্যাপী লাগাতার লকডাউন শুরু হচ্ছে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ১০টি ওয়ার্ডকে করোনা সংক্রমণপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে রেড জোনের আওতায় আনা হয়েছে।
১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ছাড়াও রেড জোন চিহ্নিত নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডগুলো হলো চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালীর ১৬ (চকবাজার), ২০ (দেওয়ানবাজার), ২১ (জামালখান) ও ২২ নং এনায়েতবাজার ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড।
করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভায় দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীর উল্লেখিত এলাকাগুলোকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় বিগত ১৪ দিনে ৭ জন আক্রান্ত হয়েছে- এমন এলাকাগুলোকেই রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
টেকনিক্যাল কমিটির এই সিদ্ধান্তের আওতায় নগরীতে এই প্রথম আগামী ১৬ জুন থেকে লকডাউন কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এভাবে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত ১০টি ওয়ার্ডকে পর্যায়ক্রমে লকডাউনের আওতায় আনা হবে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নতুনভাবে জোনভিত্তিক লকডাউন এলাকা ঘোষণার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে কার্যকর করার জন্য আজ ১৪ জুন (রোববার) বিকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে এক সমন্বয় বৈঠকে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ তথ্য জানান।
এই সময় তিনি বলেন, সরকার একইসাথে লকডাউন চলাকালীন সময়ে চিহ্নিত এলাকায় সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে চিহ্নিত ওয়ার্ডে যানবাহন এবং জনচলাচল ও দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এছাড়া প্রত্যেককেই অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে। এই পদক্ষেপ যথাযথভাবে কার্যকর হলে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় শতভাগ সফল হবো আমরা।
তিনি আরো বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময়ে এলাকার অধিবাসীরা নিজের এলাকায় থাকবেন এবং বাইরের কেউ নিজেদের এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। যারা ঘরে আবদ্ধ থাকবেন তাদের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণের জন্য চসিক’র পক্ষ থেকে মহল্লায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নির্দিষ্ট টেলিফোন নম্বরে এলাকাবাসীর চাহিদা মোতাবেক ন্যায্য বাজারমূল্যে খাদ্য, ওষুধপত্রসহ দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপনের উপকরণ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে। যারা হতদরিদ্র তাদের অবস্থার কথা বিবেচনা করে চসিক তাদের সকল চাহিদা পূরণ করবে।
বৈঠকে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোস্তফা খালেদ আহমেদ, বাংলাদেশ ইনফেনট্রি রেজিমেন্টের (বিআইআর) এর সিও লে.কর্নেল মাহবুব, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিক আইসোলেশন সেন্টারের পরিচালক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সমন্বয়ক ডা. আইমং প্রু ও সিইও তৌহিদুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার(সিটিএসবি) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারিশ, চসিক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরহাদুল আলম, ব্রাকের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. ইয়াছিন মিয়া, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হানিফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি