১৪ বন্ধুকে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা করে দিয়েছিলেন জর্জ ক্লুনি

সুপ্রভাত ডেস্ক :
বয়স ষাটের দিকে এগোচ্ছে। তবু তিনি আজও বহু অষ্টাদশীর স্বপ্নের পুরুষ। কারণ, তিনি জর্জ ক্লুনি। অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, স্ক্রিপ্ট রাইটার, প্রেমিক… এতগুলো পরিচয় বোধ হয় কম পড়ে যাচ্ছিল তার জন্য। এ সবের ঊর্ধ্বে তার আরও একটি পরিচয় রয়েছে। এবং সেটা নিয়েই এখন চর্চা শুরু হয়েছে। তিনি এক জন অত্যন্ত ভাল বন্ধু।
নিজের ১৪ জন বন্ধুকে তিনি ১০ লাখ ডলার করে দিয়ে সাহায্য করেছেন! বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা! ঠিকই পড়ছেন। একটা সময় এটা নিয়ে বিস্তর গুঞ্জন হয়েছিল। কিন্তু ক্লুনি অবশ্য এটা নিয়ে কোনও দিন কিছু বলেননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বিষয়টি স্বীকার করলেন।
২০১৭ সালে তার ব্যবসার পার্টনার র‌্যান্ডে গার্বার প্রথম এই খবর সামনে এনেছিলেন। তার পর সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিল এই তথ্য। কিন্তু জর্জ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। ফলে সময়ের সঙ্গে এটা নেহাত কোনও হলিউড ফিল্মের স্ক্রিপ্ট হয়েই রয়ে গিয়েছিল।
সেটা ছিল ২০১৩ সাল। সে সময়েই তার স্ত্রী আমাল আলামু্দ্িদনের সঙ্গে তার পরিচয়। আইনজীবী হিসেবে যথেষ্টই সুনাম রয়েছে আমালের। মানবাধিকার কর্মী হিসেবেও কাজ করেন তিনি। উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ আমালের মক্কেল ছিলেন।
ইটালিতে কাজের সূত্রেই আমালের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ক্লুনির। প্রথম পরিচয়েই দানা বেঁধেছিল প্রেম। ক্লুনিও তখন ‘সিঙ্গল’।
আমালের কাছে নিজের ওই ১৪ জন বন্ধুর কথা জানিয়েছিলেন। কী ভাবে দুঃসময়ে বন্ধুরা তার পাশে ছিলেন। কীভাবে রাতের পর রাত কোনও বন্ধুর বাড়িতে কাটিয়েছিলেন। কীভাবে বন্ধুরা টাকা দিয়ে তাকে সাহায্য করেছিলেন, সবটাই তিনি আমালকে বলেছিলেন।
তার কাছে ওই বন্ধুরাই ছিলেন পরিবার। ৩৫ বছর ধরে বন্ধুরা তার পাশে পরিবারের মতোই ছিলেন। ২০১৩ সালের ‘গ্রাভিটি’ সুপারহিট হওয়ার পরই বন্ধুদের ওই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সেই ১৪ জন কাছের বন্ধুকে ১৪টি ব্যাগে ১০ লাখ ডলার করে দিয়ে দেন। সারা জীবন পরিবারের মতো পাশে থাকার ‘যৎসামান্য’ প্রতিদান ছিল এটা।
ক্লুনির ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ওঠা পড়া গিয়েছে। তার জীবনে বহু বার প্রেম এসেছে কিন্তু দাম্পত্য জীবন ততটা সুখের ছিল না। ১৯৮৯ সালে টালিয়া বালসামের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। সে বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল সেই ১৯৯৩ সালে। তার পর থেকেই বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাস উঠে গিয়েছিল ক্লুনির। এর পরের ২০ বছর খান দশেক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ক্লুনি।
কখনও তার পাশে ব্রিটিশ মডেল, কখনও আবার ইটালীয় অভিনেত্রী। এক সময় আবার তার প্রেমিকা ফরাসি টিভি তারকা সেলিন বালিট্রান। কিন্তু কোনও সম্পর্কই বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি।
২০১৩ সালে বন্ধুদের ওই টাকা দেওয়ার ঠিক এক বছর পরই ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ৫৪ বছরের ক্লুনি বিয়ে করেছিলেন ৩৬ বছরের আমালকে। ক্লুনির ব্যক্তিগত জীবনে এই বিয়ে সৌভাগ্যের প্রতীক।
সেই রয়্যাল ওয়েডিং ঘিরে সে সময় যথেষ্ট শোরগোল পড়েছিল বিনোদন দুনিয়ায়। যদিও পরে শোনা গিয়েছিল, দু’বছরের দাম্পত্যে আমাল সন্তান চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্লুনি তাতে রাজি হননি। তার পর ৩০ কোটি ডলারের সমঝোতায় তাদের ডিভোর্সের খবরও সামনে আসে।
কিন্তু শেষমেশ আমলাকে হারাতে হয়নি ক্লুনিকে। যমজ সন্তান নিয়ে সুখেই রয়েছেন তারা।