সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা

ইভিএমে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা থাকবে

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী প্রচারণায় কিছু সহিংস ঘটনা ঘটলেও নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। ফলে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই। পাশাপাশি সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজনীয়তাও কমিশন অনুভব করছে না। যেখানে ইভিএমে ভোট হবে সেখানে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা থাকবে। ভেতরে একজনের ভোট আরেকজন দেওয়া সম্ভব না।’ গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য’ হওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি, আনসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার ১৬ জনের বক্তব্য আমরা শুনেছি। নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ে তারা সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেকে আশাবাদী যে, ২৭ জানুয়ারির চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, বিভিন্ন পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েন সঠিকভাবে হয়েছে। আশা করি নির্বাচন ভালো হবে।’
নির্বাচনে সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসি নূরুল হুদা বলেন,যারা এই নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করছে তাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে। আর তবেই সহিংসতা এড়ানো সম্ভব।
নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি না দেয়া প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন বৃহস্পতিবার বা রবিবার হলে সেখানে আমাদের আশা থাকে ভোটাররা ভোট দেবে। কিন্তু দেখা যায় ছুটি পেয়ে তারা সবাই বাড়ি চলে যায়, ভোট দেয় না। সেকারণে আমরা মাঝখানে রাখি। কেবিনেট থেকে একটা নির্দেশনা জারি আছে, যারা ব্যক্তিগত বা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন তাদের যেন ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এ কারণে সাধারণ ছুটি রাখি না।’
নির্বাচনের দিন ট্রাক এবং মোটর সাইকেল চলাচল নিষেধ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় মোটরসাইকেলের মাধ্যমে বহিরাগত লোকজন এসে থাকে, তা নিয়ন্ত্রণে বাইক বন্ধ করা হলো। তবে সাধারণ ছুটি না থাকায় মানুষের সুবিধার্থে গণপরিবহন যথারীতি চলাচল করবে।’
বাসায় গিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানির বিষয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনা কারণে হয়রানি করছে এমন কোন অভিযোগ আমাদের নেই। যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আছে এবং আদালতের ওয়ারেন্ট আছে অবশ্যই পুলিশ তো তাদের গ্রেফতার করার জন্য চেষ্টা করতে পারে। নিরপরাধ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাদের অভিযান নেই।’
রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘শনিবার পর্যন্ত জমা পড়া ৫৮টি অভিযোগের মধ্যে ৩৫টি নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বাকিগুলো তদন্তাধীন।’
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার রশিদুল হক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানসহ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।