সুফি মিজানকে ‘ব্রান্ডিং ফেস’ হিসেবে দেখতে চায় ‘সাঁকো’

পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান। ফাইল ছবি

সুপ্রভাত ডেস্ক :

খুব কি অত্যুক্তি হবে মিজান সাহেব যদি চাঁটগার ব্র্যান্ডিং ফেস হন! মনে হয়, বিকল্প খোঁজার চেষ্টাটুকুও করতে হবে না। দেশের উন্নয়নে, সামগ্রিক উন্নয়নে এভাবে ব্র্যান্ডিংয়ের প্রচলন বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে।

টিম সাঁকো আশা করে, সুফি মিজানকে নিয়ে সিরিয়াস কিছু একাডেমিক রিসার্চ হবে, এটাও আশা করে তিনি ব্র্যান্ড হিসেবেও সমাদৃত হবেন আরো বড় পরিসরে। ’

সোমবার (২৩ নভেম্বর) জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তারুণ্যনির্ভর প্ল্যাটফর্ম ‘সাঁকো’ পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমানকে নিয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসে বিষয়টি এভাবেই তুলে ধরেন।

এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের বাণিজ্যপাড়া খ্যাত খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, চাক্তাই, আগ্রাবাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।

‘সাঁকো’র উদ্যোক্তা আরাফাত রূপক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ভাবনাগুলো আমরা শেয়ার করেছি। বিষয়টি বেশ সাড়া ফেলেছে। আশাকরি, নীতিনির্ধারকরাও বিষয়টি নিয়ে ভাববে।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানো সফল শিল্পপতি পিএইচপির সুফি মিজানুর রহমান। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। তাঁকে ব্রান্ডিং করতে পারলে চট্টগ্রাম তথা দেশের অনেক বেকার তরুণ বৈচিত্র্যময় উদ্ভাবন, শিল্প ও ব্যবসায় এগিয়ে আসবেন।

‘চট্টগ্রামে দুইশ’ বছরের ব্যবসায়ী পরিবার আছে। বংশ পরম্পরায় এখনো স্বগৌরবে টিকে আছে। আবার অনেক বনেদি পরিবারের ব্যবসা হারিয়ে গেছে, করপোরেট ম্যানেজমেন্টর অভাবে। আমরা চাই-পুরো চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তরুণরা গবেষণা করুক। চট্টগ্রাম চেম্বারের ইনশিয়েটিভ ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র মাধ্যমেও আমরা কিছু কাজ করতে চাই। ’ যোগ করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

‘সাঁকো’র স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে- ‘শিক্ষা নয় কেবল, তিনি দীক্ষাও দেন। ৮০০ কোটি টাকার উপর রাজস্ব দেয় তাঁর প্রতিষ্ঠান। তাও আবার সংখ্যায় ৩০ টার উপরে। এখনো তিনি রীতিমতো অফিস করেন নিয়ম মেনেই। এই আশির কাছাকাছি বয়সেও সদ্য ত্রিশ পেরোনো যুবকের শক্তিতে এগোন তিনি। তিনি একজন কষ্টিপাথর! শান্তি,সুখ ও সমৃদ্ধির বার্তাবাহক।
হ্যাঁ, পিএইচপি ফ্যামিলি এই তিন নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। সুফি মিজানুর রহমানের পিএইচপি। অথবা পিএইচপির সুফি মিজান। দুই শব্দ এখন একে অপরের সমার্থক।

জীবিত অবস্থায় একুশে পদক পাওয়া প্রথম শিল্পপতি তিনি। যেখানেই গেছেন, সাফল্য করায়ত্ত হয়েছে। মুখে সদা স্মিত হাসি বুঝতে দেয় না, কতটা পথ পেরিয়ে আজকের সুফি মিজান তিনি। কতটা পথ মাড়িয়ে পথিক হয়ে নতুন নতুন পথের জন্ম দিচ্ছেন তিনি।

১০ হাজারেরও বেশি কর্মী তাঁর পিএইচপি ফ্যামিলিতে কাজ করছেন। তাঁর কর্মীরাও কখনোই উনাকে আগে সালাম দিতে পারেননি। সুফি শব্দটা কেবলই একটা উপাধি নয় উনার কাছে। চলনে- ভূষণে তিনি আদতেই একজন সুফি।

এক ব্যবসায়ী মিজান সাহেবকেই জানা সম্ভব হয়ে উঠেনি এখনো। এর বাইরেই তো রয়েছে হাজারো পরিচয়। কখনো মোটিভেটর, কখনো পাবলিক স্পিকার, বা কখনো আপাদমস্তক একজন ওয়ায়েজিন। দখলে রেখেছেন একাধিক ভাষাও।

বহির্বিশ্বের কথা বাদ দেই, পাশের দেশ ভারতেই এমন উদাহরণ অহরহ। টাটা, বিরলা, আম্বানি নিয়ে এখন সেখানে পিএইচডি হচ্ছে। মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা বা আজিম প্রেমজিরা বহু আগেই একাডেমিক পাঠ্য হয়ে গেছেন সেখানে। একটা আফসোস তো কাজ করেই; মিজান সাহেবকে নিয়ে এখনো ঐ অর্থে তেমন কিছু চোখে পড়েনি। নিজের অনেক পরিচয়ের একটা কিন্তু শিক্ষা উদ্যোক্তাও।

চাঁটগা এমনিতেই ব্যবসায়ীদের শহর। খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, রিয়াজুদ্দিন বাজার বা পোর্ট; চাঁটগা মানেই ব্যবসায়ীদের আঁতুড়ঘর। সাধারণে যেমন অসাধারণ তিনি, তেমনি খুব সহজেই উনাকে আলাদা করা যায় বাকি ব্যবসায়ীদের থেকে। বহু আগেই একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন তিনি।

ব্র্যান্ডিংয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে এমন অনেক ব্যাপার কিন্তু আছে যেখানে প্রমিনেন্ট মানুষগুলোকে প্রপারওয়েতে কাজে লাগানো যায়। আবারো উদাহরণ দিতে গেলে বলতে হয়, ভারতে গুজরাটের ফেস বা অ্যাম্বাসেডর কিন্তু অমিতাভ বচ্চন। পশ্চিমবঙ্গে যেমন শাহরুখ, পাঞ্জাবে সম্প্রতি যেমন সোনু সুদকে নেওয়া হয়েছে। ’