সামাজিক দূরত্ব আশ্রয়কেন্দ্রেও

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান‘ মোকাবেলায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও থাকছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান‘ মোকাবেলায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব পড়েছে। সাধারণভাবে উপকূলীয় এলাকার লোকদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে ৪৭৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু এবার করোনোর কারণে রয়েছে সামাজিক দূরত্বের বিষয়। তাই এবার নির্ধারিত ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে ৩ হাজার ৫১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামাল হোসাইন বলেন, জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে সোমবারের সভায় ২৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেসব নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহি অফিসারগণ দায়িত্ব পালন করবেন।
জানা যায়, উপকূলের মানুষদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার জন চট্টগ্রামে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া এবার করোনার কারণে আরো ২ হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১ হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে। একইসাথে চট্টগ্রামে ৬ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে রয়েছে। এরা উপকূলীয় এলাকায় কাজ করছে। একইসাথে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ফায়ার সার্ভিস এবং স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে সিভিল সার্জনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমাদের ৬ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। চট্টগ্রামের জন্য ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখানোর কারণে উপকূলীয় এলাকায় ইতিমধ্যে দুটো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। একইসাথে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিংও করছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি টিমে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। স্থানীয় যুবকদের নিয়ে এসব টিম গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের সাথে উদ্ধার কার্যক্রম করে থাকে এসব সদস্য।
ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবছর আমরা নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষদের নিয়ে যাই। তবে এবার কোভিড-১৯ এর কারণে একটি কেন্দ্রে বেশি মানুষ রাখতে পারবো না। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে গিয়ে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিত্যক্ত পাকা বাড়ি ব্যবহার করা হবে।
কোন দিন থেকে উপকূলীয় মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনা শুরু করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মঙ্গলবার থেকে আমাদের টিম দুর্গত মানুষদের নিরাপদে আনতে কাজ করবো।
উল্লেখ্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান সম্পর্কে বলা হয়েছে এটি কাল মধ্যরাতের পর থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে। প্রবলগতির এই ঘূর্ণিঝড় ইতিমধ্যে সুপার সাইক্লোনের তকমা পেয়েছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।