শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন সুজনের

নগরীর বন্ধ বেসরকারি স্কুল-কলেজসমূহে শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কাবুলিওয়ালার মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি আজ ১ জুলাই (বুধবার) এ অভিযোগ করেন।
এ সময় সুজন বলেন, করোনা মহামারী দেশের আর্থিক পরিস্থিতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস পরবর্তী সংকট সামাল দিতে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ইতিপূর্বে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ছুটি বর্ধিতকরণের ফলে আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণের আওতায় কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং শিল্প গ্রুপ নগরীতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এসব স্কুল-কলেজে উচ্চবিত্ত ছাড়াও মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর সন্তানরাও লেখাপড়া করে। সরকারি ঘোষণা মোতাবেক বন্ধের সময়ও নগরীর অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টিউশন ফি আদায়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টিউশন ফি আদায়ে অভিভাবকদের কাছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নম্বরও পাঠিয়ে দিচ্ছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান বেতন আদায়ে ফোন এবং মেসেজের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপ দিচ্ছে- যা চরম নিষ্ঠুরতার সামিল।
তিনি বলেন, অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানের মতোই ‘শিক্ষা’ মানুষের মৌলিক অধিকার। একটি কল্যাণরাষ্ট্র মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই শিক্ষাকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে এ খাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে। তারপরও সরকারি নির্দেশনা অম্যান্য করে প্রতি বছরের শুরুতেই বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজে ভর্তি, পুনঃভর্তির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ আদায় করে। শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ এবং নামে-বেনামে বিভিন্ন উপলক্ষের নামে টাকা আদায় করার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে টাকার পাহাড় গড়ে উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, নাগরিক উদ্যোগ কোনো অবস্থাতেই টিউশন ফি’র বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু হঠাৎ করে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসের বকেয়া বেতন একসাথে পরিশোধ করা কোন অভিভাবকের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রয়োজনে কিস্তির মাধ্যমে এসব টিউশন ফি আদায় করা যেতে পারে। তা না করে যদি টিউশন ফি’র জন্য অভিভাবকদের হুমকি প্রদান করা হয় তাহলে নাগরিক উদ্যোগ চুপ করে বসে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতির মাঝেও প্রয়োজনে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
তিনি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ প্রশাসনের নিকট আবেদন জানান। বিজ্ঞপ্তি