রং তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছে প্রতিমার অবয়ব

শারদীয় দুর্গোৎসব

ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

রুমন ভট্টাচার্য
ঘনিয়ে এসেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজাকে ঘিরে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিমার অবয়ব।
গতকাল সরেজমিন নগরীর সদরঘাট স্বর্গীয় দুলাল পাল প্রতিমালয়, লোকনাথ শিল্পালয়, নটরাজ শিল্পালয় ও সিআরবির মঙ্গল পালের প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রতিমার প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। বাকি ১০ শতাংশ কাজ পূজার ২-৩ দিন আগেই শেষ হয়ে যাবে। তবে করোনার কারণে এবার গতবারের চেয়ে প্রতিমা কম তৈরি করেছেন। যা তৈরি করেছেন তার প্রায় সবগুলোই অর্ডার হয়েছে।
কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্রতিমাই তৈরি হয়ে গেছে। নানা রঙে দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমার অবয়ব। এসব দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
স্বর্গীয় দুলাল পাল প্রতিমালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী বাসুদেব পাল বলেন, ‘প্রতিমার কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ। বাকি ১০ শতাংশ দু’একদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। শুরুতে প্রতিমা তৈরি নিয়ে অনেক দ্বিধাদ্বন্দে ছিলাম। যাক শেষ পর্যন্ত পূজা কমিটির নির্দেশনার পর প্রতিমা তৈরি শুরু করি। এবার প্রায় ৩৫টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এর মধ্যে ১টি ছাড়া প্রায় সবগুলোই অর্ডার হয়েছে। গতবার তৈরি করেছিলাম ৪৫টির মত। এবার ১০টি কম। করোনার কারণে এবার বাইরে গিয়েও কোনো প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেয়নি।’
লোকনাথ শিল্পালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী অমল পাল বলেন, এবার ২৬টি প্রতিমা তৈরি করেছি। গতবার করেছিলাম ৩৬টির মত। বাইরে অর্ডার নিয়েছি ২টা। রংয়ের কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু বাহ্যিক কিছু কাজ বাকি আছে। এসব কাজ ডেলিভারির আগে শেষ হয়ে যাবে।’
লোকনাথ শিল্পালয়ের মৃৎশিল্পী সঞ্জয় পাল ও খোকন পালন বলেন, ‘হাতে সময় কম তাই দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। প্রতিদিন কারখানায় সকাল-রাত গভীর পর্যন্ত ৬-৭ জন কাজ করি।’
নটরাজ শিল্পালয়ের স্বাত্ত্বাধিকারী বাসুদেব পাল বলেন, ‘প্রতিমার কাজ শুরু করেছি শ্রাবণ মাস থেকে। সময়ের অভাবে এবার মাত্র ১৬টি প্রতিমা তৈরি করেছি। গতবার করেছিলাম ২৬টি। করোনাকালীন সময়ে প্রায় সবগুলো প্রতিমাই অর্ডার হয়েছে এটা ভেবে স্বস্তি পাচ্ছি। কারণ আমাদের আয় এটাই। প্রতিমা তৈরি করেই আমাদের জীবন চলে। শুরুতে অনেক চিন্তা পড়ে গিয়েছিলাম।’
উল্লেখ্য, পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে হবে বোধন। পরদিন সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল অনুষ্ঠান। ২৬ অক্টোবর সোমবার মহাদশমীতে বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের সকল আনুষ্ঠানিকতা।