যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জো বাইডেন

সুপ্রভাত রিপোর্ট :
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। বড় কোনো সংকট দেখা না দিলে আগামী চার বছর ওভাল অফিসের নিয়ন্ত্রণ থাকছে তারই হাতে।
স্থানীয় সময় বুধবার বেলা ১১টার পর ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ভবনে শপথ নেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হ্যারিস। হ্যারিসের শপথের আগে আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন লেডি গাগা। মিনেসোটা সেনেটর অ্যামি ক্লোবাকার অভিষেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
শপথ নেওয়ার পর জো বাইডেন তার ভাষণে বলেছেন, এই দিনটি গণতন্ত্রের। এই দিনটি আমেরিকার। এই দিনটি ইতিহাস ও আশার দিন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমেরিকাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে, তার দেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আজকে আমরা গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন করছি।
জো বাইডেন বলেন, আমরা শিখেছি যে গণতন্ত্র অত্যন্ত মূল্যবান।
তিনি বলেন, যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি ভাষণ দিচ্ছেন সেখানে কয়েকদিন আগে সহিংসতা ঘটে গেছে যা ক্যাপিটল হিলের ভিত্তি নাড়িয়ে দিয়েছে। এখন তিনি সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহবান জানাচ্ছেন।
এই শপথ অনুষ্ঠানে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্রের দেড়শো বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এর আগে, নির্ধারিত সময় সকাল ১০টার দিকেই ক্যাপিটলে পৌঁছান জো বাইডেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জিল বাইডেন, নতুন ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রমুখ।
বাইডেনের জন্য মার্কিন রাজনীতির চূড়ায় পৌঁছানোর এই পথ মোটেও সহজ ছিল না। তিনবারের চেষ্টায় এই সাফল্য ধরা দিয়েছে তার হাতে। ১৯৮৭ এবং ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বাইডেন। দু’বারই ব্যর্থ হন।
কিন্তু ২০২০ সালে আর নিরাশা নয়, ধরা দিয়েছে বহুল প্রত্যাশিত সেই সফলতা। বিপুল ভোটে জিতে ট্রাম্পের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছেন হোয়াইট হাউসের নিয়ন্ত্রণ।
তবে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন- এটাই যেন বাইডেনের জীবনে কঠিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যত কষ্ট করে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তার চেয়ে আরও কয়েকগুণ দুর্ভোগ হয়তো অপেক্ষা করছে সামনের দিনগুলোতে।
নির্বাচনের পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে বাইডেনকে। ট্রাম্প পরাজয় অস্বীকার করেছেন বারবার। ক্ষমতা হস্তান্তরে তার প্রশাসন চরম অসহযোগিতা করেছে বাইডেন টিমকে।
সবশেষ গত ৬ জানুয়ারি পার্লামেন্ট ভবনে সহিংসতা ঘটনা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য সামনের দিনগুলো মোটেও সহজ হবে না। করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক দৈন্যদশা, ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির কারণে যে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য বাইডেনকে বেশ ভুগতে হবে। এজন্য আগামী দিনগুলো খুব হিসাব করে পা ফেলতে হবে নতুন প্রশাসন।