যুক্তরাষ্ট্রের ঘরে ফেরা

আবদুল মান্নান »

অনেকের জন্য দেশটি স্বপ্নের দেশ, প্রাচুর্যের দেশ। এই প্রাচুর্যের দেশে প্রায় পৌনে ছয় লক্ষ মানুষ গৃহহীন, তারা পার্কে বা ফুটপাতে রাত কাটায় । জীবন ধারণের জন্য সরকারি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল । দেশটির আদি বাসিন্দাদের খুব বেশি মানুষ সেই দেশে আর অবশিষ্ট নেই । সাদা বহিরাগতদের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ আর নিপীড়নের কারণে তারা এখন অনেকটা বিলুপ্ত । আছে কিছু, কোন কোন নির্ধারিত স্থানে যেমনটা সার্কাসের প্রাণিরা থাকে। দু’শ বছরেরও বেশি সময় আগে বহিরাগতরা এসে স্থানীয়দের জানিয়ে দিল, তোমরা এখন বিদায় হও, এই জমিন আমাদের । বহুদিন দেশটি ইংরেজদের ঊপনিবেশ ছিল । তারপর একদিন তারা তা যুদ্ধ করে স্বাধীন করলো । তারপর সেই দখল হওয়া দেশে একটি নূতন দেশের জন্ম হলো যার নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । যারা রাষ্ট্রটির গোড়াপত্তন করেছিলেন তারা অনেকটা বিবেকবান মানুষ ছিলেন । একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন । তাঁরা নূতন রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি অত্যন্ত আধুনিক সংবিধান তৈরি করেছিলেন যার শুরুটা করা হয়েছিল ‘আমরা এই দেশের (যুক্তরাষ্ট্রের অথবা বাংলাদেশের বা ভারতের) জনগণ’ দিয়ে যা বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধানে সংযোজন করা হয় ।
সেই দেশে একসময় কৃষিজমিতে কাজ করার জন্য আফ্রিকা হতে কালো মানুষদের জোরপূর্বক নিয়ে আসা হলো। বাজারে তাদের বিক্রি করা হলো । যে যত বেশি মূল্য দিতে পারবে সেই কালো মানুষটি তার । অনেকটা ভেড়া ছাগল কেনার মতো আর কি । মালিকের নাম তার পিঠে গরম লোহার ছেঁকা দিয়ে খোদাই করে দেয়া হলো যাতে সে পালিয়ে যেতে না পারে। এদের বলা হতো ক্রীতদাস, মানে কেনা গোলাম। বেচাবিক্রির কাজটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিল ইংরাজরা। বেশ ভাল ব্যবসা। সেই ক্রীতদাসদের কোন মানবিক অধিকার ছিল না। কেউ যদি মালিকের অত্যাচারে পালিয়ে যায় তাহলে তাকে হত্যা করার অধিকার ছিল মালিকের। গত শতকের ষাটের দশকে এই কালো আদমিদের কোন নাগরিক অধিকার ছিল না। হাঁটার জন্য অনেক জায়গায় পৃথক রাস্তা, বাচ্চাদের জন্য পৃথক স্কুল, বাসে বসার জন্য আলাদা করা আসন এমনকি প্রার্থনা করার জন্য পৃথক গির্জা । অনেক আন্দোলন, অনেক রক্তক্ষরণের পর ষাটের দশকে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া শুরু করে, তবে বিভাজন এখনো আছে।
যুক্তরাষ্ট্রনামক রাষ্ট্রটি খাতায় কলমে গণতন্ত্রের বড় পূজারি। কোন দেশে, তাদের ভাষায় গণতন্ত্র না থাকলে তারা সেখানে গণতন্ত্র রপ্তানি করতে বেশ তৎপর হয়ে ওঠে। সেই দেশে যদি কোন প্রাকৃতিক সম্পদ থাকে তা হলে তার বড় বিপদ কারণ অতলান্তিক মহাসাগরের অপর পার হতে যুক্তারাষ্ট্র যুদ্ধজাহাজ, বোমারু বিমান আর পদাতিক সৈন্য পাঠায় সেই দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করতে, লক্ষ্য সম্পদ লুণ্ঠন। এতে সেই দেশ ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে । এইভাবে ধ্বংস হয়েছিল ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, আফগানিন্তান, মিশর প্রভৃতি দেশ । তারও অনেকে আগে ষাটের দশকে একই কাজ করার চেষ্টা করেছিল অনেক দূরের দেশ ভিয়েতনামে। সে এক অসম যুদ্ধ। একদিকে মরচেধরা গাদা বন্দুক, জনগণের সমর্থন আর নিখাদ দেশপ্রেম। পায়ে জুতাও নেই। অন্যদিকে বিশ্বের সর্বাধুনিক মারণাস্ত্র। যুদ্ধ চললো প্রায় ঊনিশ বছর। তারপর ভিয়েতনামের খালি পায়ের যোদ্ধাদের হাতে মার খেয়ে ভিয়েতনাম হতে দিনের আলোতে পলায়ন, যা ড্রইং রুমে বসে দেখলো সারা বিশ্বের মানুষ । সেই যুক্তরাষ্টাকে তাদের পরাশক্তির ইমেজ উদ্ধার করতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ দীর্ঘ সময়। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী তাদের আধিপত্য অনেকটা খর্ব করে দিল রাশিয়া আর চীন। ইরান আর উত্তর কোরিয়াও আদায় করে নিল তাদের সমীহ কারণ তারা পারমাণবিক শক্তি । তারপরও যুক্তরাষ্ট্র অনেক ভাল কাজের জন্য বড়াই করতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের যোগদান যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। না দিলে ফ্যাসিবাদ গ্রাস করতে পারতো পুরো ইউরোপকে। নব্বইয়ের দশকে বলকান যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করলে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারতো ।
সেই যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন আর থমাস জেফারসনের মতো মহান ব্যক্তিরা। সই দেশের ষোড়শতম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তার দেশে ক্রীতদাস প্রথা বিলুপ্ত করেছিলেন নিজ দেশের বিভক্তির ঝুঁকি নিয়ে । ফ্রেডেরিক ডি রুজভেল্ট ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম প্রেসিডেন্ট। নজিরবিহীন ভাবে তিনি চার মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন । মানুষ তাঁকে ভালবাসতেন কারণ তিনি নিজ দেশে ত্রিশের দশকের ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ দুইবার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। সেই যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ড. মার্টিন লুথার কিং এর মতো একজন দেবতুল্য, মানবতার পুজারি। কৃষ্ণাঙ্গ ড. কিং মানুষকে সমান মর্যাদা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন । গণতন্ত্র রপ্তানিকারক সেই দেশটিতে গণতান্ত্রিক রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতি চার বছর একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দেশটিতে মূল রাজনৈতিক দল আছে দু’টি। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট। প্রথমটির প্রতীক হাতি আর পরেরটির গাধা। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালে । প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের মধ্যে। ট্রাম্পের কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই । একজন জাত ব্যবসায়ী। একসময় পেশাদার কুস্তি দলের প্রোমোটার ছিলেন । দাদা অভিবাসী হয়ে এসেছিলেন জার্মানি হতে। যুক্তরাষ্ট্রে এসে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন পতিতালয় পরিচালনার ব্যবসা। কিছুদিন নাপিতের দোকানে কাজও করেছেন । ট্রাম্পের পিতা ছিলেন জমির দালাল । অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হেনরি ক্লিনটনের স্ত্রী। একসময় নিউ ইয়র্ক হতে নির্বাচিত সিনেটর । বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট তাঁর পররাষ্ট্র মন্ত্রী। সেই নির্বাচনে হিলারি ট্রাম্পের চেয়ে ত্রিশ লক্ষ ভোট পেয়েও হেরে গেলেন ¯্রফে তাদের দেশের জটিল নির্বাচনী পদ্ধতির কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের জটিল পদ্ধতির কারণে যে প্রার্র্থী সব চেয়ে বেশি ভোট পান তিনি নির্বাচনে নাও জিততে পারেন । সেই দেশে তাদের জন্মলগ্ন হতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে তাদের ইলেকটোরাল কলেজ নামের এক অদ্ভুত ব্যবস্থা । যে রাজ্যে যত বেশি জনসংখ্যা সেই রাজ্যে ততবেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট । মোট ৫৩৮, যার মধ্যে জিততে হলে ২৭০ ভোটের প্রয়োজন হয় । এটি একটি নম্বর, কোন ব্যক্তি নয় । একবার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়ে গেলে সেই ভোট আর কোন কাজে আসে না ।
২০২০ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচলিত রেওয়াজেই ডোনাল্ড ট্রাম্প (৭৫) রিপাবলিকান প্রার্থী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (৭৭) । এত বয়সে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে কেউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে না । যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার সংখ্যা সাড়ে পনেরো কোটির মতো । এবার রেকর্ড সংখ্যক সাড়ে চৌদ্দ কোটি ভোটার ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতে ভোটার সংখ্যা প্রায় একানব্বই কোটিরও বেশি । সেই দেশে সাত কিস্তিতে ভোট হয়। ভারতে বা বাংলাদেশে একটা নির্বাচন কমিশন আছে যারা নির্বাচন পরিচালনা করে। তেমন কোন কমিশন যুক্তরাষ্ট্রে নেই । সেই দেশে নির্বাচন পরিচালনা করার দায়িত্ব স্টেট প্রশাসনের। কোন কোন রাজ্যে কাউন্টিরও (উপজেলা) পৃথক নিয়ম কানুন থাকে । নির্বাচন সম্পর্কে সকল নিয়ম কানুন স্টেট বা রাজ্য প্রশাসন নির্ধারণ করে। ভারতে নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা সম্ভব হলেও যুক্তরাষ্ট্রে তা প্রকাশ করতে চারদিন লেগেছে। এর একমাত্র কারণ পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াগত ব্যবস্থাপনা।
সেই দেশের মানুষ অনেকটা শ্বাসরূদ্ধকর অবস্থায় অপেক্ষা করলেও বিশ্বের মানুষ অপেক্ষা করেছে কিছুটা উৎকণ্ঠার মধ্যে কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রচলিত প্রথাকে তছনছ করে দিয়েছে। তাঁর ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ নীতি অনেক দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। চীন ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, তাদেরকে ট্রাম্প প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। তাতে যত না ক্ষতি হয়েছে চীনের, তার চেয়ে বেশি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের জামানায় একটি অমানবিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে তাঁর অভিবাসন নীতির কারণে। তাঁর দেশে সকল ধরণের সমস্যার জন্য তিনি মেক্সিকান অভিবাসীদের দায়ী করেছেন । বলেছেন, তিনি দুই দেশের মাঝখানে দেয়াল তুলে দেবেন । তিনি তা করতে পারেননি। মেক্সিকো হতে আসা অবৈধ অভিবাসীদের শায়েস্তা করারা জন্য তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জোরপূর্বক পৃথক করে নাৎসি বন্দি শিবিরের মতো বন্দি শিবিরে পাঠিয়েছেন। এমন কাজ তিনি অন্যান্য দেশের অবৈধ অভিবাসীদের বেলায়ও করেছেন। আবার সময়মতো এই সব বাচ্চাদের কোন বাছবিচার ছাড়া মেক্সিকোতে ঠেলে দিয়েছেন। নিজ দেশের কালো আর সাদার মধ্যে বিভাজনটা আরো অনেক বেশি প্রকট করেছেন। কথায় কথায় পুলিশের হাতে সেই দেশের কালো মানুষরা চরমভাবে নিগৃহিত হয়েছেন । তিনি জলবায়ূ পরিবর্তনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে তা হতে সরে এসে আন্তর্জাতিক ভাবে সমালোচিত হয়েছেন । ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তার আমালে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে । ইরানকে তিনি অহেতুক শত্রু বানিয়েছেন। বলেছেন, উত্তর কোরিয়াকে পৃথিবীর বুক হতে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন । আবার সেই উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম ইল জং এর সাথে গলাগলি করে এসেছেন । যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মিথ্যা কথা বলাকে একটি শিল্পে পরিণত করেছেন । ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা হিসাব করেছে তিনি গত চার বছরে কুড়ি হাজার মিথ্যা কথা বলেছেন । সকলকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছিল । নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি ঘোষণা করেছেন তিনি যদি ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হেরে যান তা হলে তিনি সেই ফলাফল মানবেন না কারণ ধরে নিতে হবে তাঁকে কারচুপির মাধ্যমে হারানো হয়েছে । তাঁর সমর্থকরা ভোট গণনার সময় অনেক জায়গায় অস্ত্র নিয়ে টহল দিয়েছে। ভোট গণনা বন্ধ করার জন্য গণনাকারীদের হুমকি দিয়েছে। প্রায় একশটি শহরে দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়েছে। এটি একটি অভূতপূর্ব ঘটনা । শেষ পর্যন্ত চারদিন শ্বাসরুদ্ধকর অপেক্ষার পর বিশ্বের মানুষ জানলো ট্রাম্প নন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউজে যাচ্ছেন ডোমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। সাথে তার ভ্ইাস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কমলা হ্যারিস । তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট, যিনি আবার বাদামি বর্ণের। তাঁর মা ভারতীয় আর পিতা জ্যামাইকান । বলে রাখা ভাল, বাইডেন নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের চেয়ে একজন ভাল মানুষ। তবে তার বিজয়েও পিছনে ট্রাম্পের চার বছরের হঠকারি আচরণ অনেকটা কাজ করেছে । হাজার হাজার রিপাবলিকান সমর্থক ট্রাম্পকে ভোট দেয় নি । তারা মনে করেছেন ট্রাম্প দলের অনেক ক্ষতি করেছেন। তিনি নিজেকে ছাড়া আর কিছু চেনেন না। তাঁর কোন পূর্বসূরি যুক্তরাষ্ট্রকে এমনভাবে দ্বিখ-িত করেননি। ট্রাম্প নির্বাচন বাতিল করে আবার পুনঃভোট গণনার জন্য আদালতে গিয়েছেন। তাতে পরিস্থিতির কোন হেরফের হবে বলে মনে হয় না। সসম্মানে পদ ছেড়ে দেয়াটাই তাঁর জন্য মঙ্গল।
জো বাইডেনের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। প্রথমে নিজ বিভাজিত দেশকে আবার জোড়া লাগাতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ইমেজের যে ক্ষতি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে আবার একটি মানবিক দেশে পরিণত করতে হবে। ট্রাম্প কোভিড-১৯ যে একটি বড় সমস্যা তা কখনো স্বীকার করেননি। এই মহামারিতে সেই দেশে এই পর্যন্ত দুই লক্ষ আটত্রিশ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এই সমস্যা মোকাবেলাকে বাইডেনের করণীয় তালিকায় উপরে স্থান দিতে হবে। তবে আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তা করার সুযোগ পাবেন না কারণ ওই দিনই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। আর বাংলাদেশের প্রত্যাশা থাকবে মিয়ানমারকে এই কথাটা বুঝানো যে, তারা তাদের দেশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাথে যে আচরণ করছে তা কোন সভ্য দেশ করে না। তাদের এই আচরণের কারণে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচি এখন লেডি হিটলারে পরিণত হয়েছেন। জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি । বিশ্বের মানুষ থমাস জেফারসন আর আব্রাহাম লিংকনের যুক্তরাষ্ট্রকে ফেরত চায় ।

লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক