মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের সদস্যপদ বাতিল এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীকী অবস্থান

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের অবমাননাকর বক্তব্য, ইতিহাসবিকৃতি এবং বীর মুুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও মুুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে গতকাল সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে প্রতীকী অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজিত সমাবেশে মোস্তাফিজের সংসদ সদস্যপদ বাতিল ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করার দাবিসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। অন্যথায় সারাদেশের জেলা-উপজেলা থেকে একযোগে ঢাকামুখী লংমার্চ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধসহ আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রতীকী অবস্থান চলাকালে স্থানীয় শিল্পীরা জাগরণী সংগীত পরিবেশন করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী মৌলভী সৈয়দের বড়ভাই ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফকে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না জানানো, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমান কটূক্তি করে আসছেন।

এমপি মোস্তাফিজ আওয়ামী রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয় বলেই বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের সন্তান ও সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছেন। জামাত-শিবির ও রাজাকার-আলবদরদের সাথে তার রীতিমতো যোগাযোগ রয়েছে। মোস্তাফিজ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমিরকে সম্মাননা দেন। এতে বোঝা যায়, জামায়াতের সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছেঅ

বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, গত ২৪ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন সমাবেশে বাঁশখালীর এম.প মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক বীর মুুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও মুুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়। এ হামলা বাংলাদেশের অস্তিত্বের ওপর হামলা। এ হামলা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। কোনো আইনপ্রণেতা এমন জঘন্য কাজ করতে পারেন না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম বলেই আজ অনেকে মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা কোনো মতোই মেনে নেয়া যায় না। বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, এমন মিথ্যা কথা সরকারিদলের একজন এমপি হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলতে পারেন না। বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধারাও আছেন। মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৌলভী সৈয়দের পরিবার নিয়ে কটূক্তি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

অন্য বক্তারা বলেন, সাংসদ মোস্তাফিজ মুক্তিযুদ্ধের সময় শিশু রাজাকার ছিলেন বলেই  মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা একদিকে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই করছেন, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মোস্তাফিজের আপত্তিকর বক্তব্য জাতি কিছুতেই সহ্য করবে না। সরকার ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে সাংসদ মোস্তাফিজের ব্যাপারে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে কি সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখতে চাই, আমরা অপেক্ষায় আছি। না হলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনির সভাপতিত্বে ও জেলা কমিটির সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সাক্ষী কাজী নুরুল আবছার, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মো. শহীদুল হক চৌধুরী ছৈয়দ, জেলা সংসদের সহকারী কমান্ডার আবদুল রাজ্জাক, মহানগর সংসদের সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), রফিকুল আলম, সাতকানিয়া কমান্ডার মোঃ আবু তাহের এলএমজি, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ ফরিদ মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ভেদু, নূর উদ্দিন, কুতুবউদ্দিন চৌধুরী, কামরুল আলম জতু, আহমেদ মিয়া, আবুল কালাম, সৈয়দ আবদুল গনি, জাকির হোসেন, একেএম আবু বক্কর, ইঞ্জিনিয়ার হারুন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী  জহুর আহমেদ চৌধুরীর সন্তান শরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রাজু, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ, চবি শিক্ষক ড. ওমর ফারুক রাসেল, মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক অলিক চৌধুরী, মহানগর যুবলীগ সদস্য দেলোয়ার হোসেন,  মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহানগর কমিটির আহ্বায়ক শাহেদ মুরাদ সাকু, জেলা কমিটির আহবায়ক  ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান সিদ্দিকী পাভেল, মহানগর কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সজিব, মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মাদ রাজিশ ইমরান, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শাহজান সেলিম, যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আজাদ, গিয়াস উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, সন্তান কমান্ড জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক তানজিল কাদেরী, মহানগরীর সদস্য আরাফাতুল মান্নান ঝিনুক, ফয়সল  জামিল ছাকী, রিপন চৌধুরী, বিবি গুল জান্নাত, হাসান মো. আবু হান্নান, মেজবাহ উদ্দিন আজাদ, সৈকত দত্ত, ফরিদ উদ্দিন, সাইকা দোস্ত,  মোশাররফ হোসেন, নুরুল আলম, নঈম উদ্দিন খান, জামাল আহমেদ, আবদুল কাদের রিমন, মো. শিবলী, তানজিম হাসান জিবু, সুফিয়ান নিলয়, জুয়েল আহমেদ তাজবীর, মিদুল দত্ত, মো. জুনায়েদ, তারেক আহমেদ প্রমুখ।

কর্মসূচি : চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের সদস্যপদ বাতিল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ কর্মসূচি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। বিজ্ঞপ্তি