বিশ্রামে সৌন্দর্য ফিরেছে সাফারি পার্কে

পর্যটনস্পটে নেই আগের মতো মানুষের কোলাহল, প্রাণীগুলো এখন নিশ্চিন্তে ঘোরাফেরা করছে-সুপ্রভাত

এম. জিয়াবুল হক, চকরিয়া :

করোনা’র প্রাদুর্ভাবে সরকারি নির্দেশনার আলোকে বন্ধ রয়েছে ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক। চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে চলমান জুলাই পর্যন্ত পাঁচ মাসে করোনা সংকটে আমূল পরিবর্তন এসেছে পার্কে। পর্যটনস্পটে নেই আগের মতো মানুষের কোলাহল। সেই সুযোগে প্রকৃতির সান্নিধ্যে আপনমনে খেলছে নানাজাতের পাখি ও বন্যপ্রাণীর ঝাঁক। বছর জুড়ে পর্যটকের বিচরণে বিরক্ত প্রাণীগুলো এখন নিশ্চিন্তে ঘোরাফেরা করছে। অন্যদিকে প্রকৃতিও নতুন করে জেগে উঠেছে। গাছপালা মেলেছে ডালপালা, ফুটছে ফুল। সব মিলিয়ে এখন নতুনরূপে, নতুন সাজে চকরিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক

করোনা সংক্রমণের পর থেকে অর্থাৎ চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রাখা হয় পার্কটি। এতে পার্কের আগের রূপ ফিরে এসেছে। গাছে গাছে কিচিরমিচির করছে পাখ-পাখালি। অবাধে বন্যপ্রাাণীরা খেলছে আপনমনে।পার্কটিতে এখন ঢোকামাত্রই চোখে পড়বে ফুলে-ফুলেভরা সুন্দর বাগান। পরিচ্ছন্ন চারপাশ। গাছে গাছে এসেছে নতুন পাতা, ফুটেছে নতুন ফুল। সবুজে ভরে গেছে চারদিক।

ময়ূর বেষ্টনীতে আপনমনে খেলছে ময়ুরের দল। মাঝে মাঝে বানরের দলও তাদের সঙ্গে খেলায় যোগ দিচ্ছে। গাছে-গাছে কাঠবিড়ালীরা ছোটাছুটি করছে। লেকের পানির ছলছল রূপ মনে এনে দিচ্ছে প্রশান্তি। আপনমনে সাঁতার কাটছে বকের ঝাঁক। ভালুক বেষ্টনীতে মনের সুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভালুকেরা। মানুষের একটু শব্দ শুনলেই বনের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে হরিণের দল। তবে জেব্রার দেখা পাওয়া মুশকিল। খাবারের সময় ছাড়া তাদের দেখাই মেলে না।

বাঘের বেষ্টনীতে শুয়ে-শুয়ে দিন কাটছে বাঘ আর সিংহের। নেই তাদের প্রতি ঢিল ছুঁড়ে মারা শিশুর দল। তাই অনেকটা আয়েশী ভঙ্গিতে শরীর এলিয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে ওরা সর্বক্ষণ। আর জলহস্তীর  দল তো পানি থেকে উঠতেই চায় না। বর্ষার জলে টইটম্বুর হয়ে উঠেছে জলহস্তীর বিশাল লেকও।

সাফারি পার্ক কর্মকর্তা মিন্টু সেন বললেন, ‘আমি প্রায় ৮-১০ বছর হলো পার্কে কাজ করছি। এতো বছরের মধ্যে পার্কের এমন সুন্দর পরিবেশ কখনও দেখিনি।

চকরিয়া পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সাংবাদিক এমআর মাহমুদ বলেন, বছরে অন্তত ২-৩ মাস পার্ক বন্ধ রাখা দরকার। এতে পার্কের সৌন্দর্য ফিরে আসবে। প্রাণীকূলও স্বকীয়তা ফিরে পাবে।

পার্ক ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, করোনার অঘোষিত বন্ধে পার্কে নতুনত্ব আনা হচ্ছে। সাজানো হচ্ছে পার্ককে। ইতোমধ্যে পার্কের মিউজিয়ামে বেশ কিছু ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।’