বিলুপ্ত খাল পুনরুদ্ধার করা হবে

নিমতলায় খাল পরিষ্কার অভিযানকালে সুজন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন নগরীর পানি চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পানি প্রবাহ পথ খালগুলো ভরাট করে স্থাপনা ও বাসা-বাড়ি নির্মাণকারী অবৈধ দখলদারদের দুর্বৃত্ত ও কুখ্যাত গণশত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এরা চট্টগ্রামকে একটি মানবিক নগর রূপান্তরের স্বপ্ন পূরণের প্রধান প্রতিবন্ধক। এদের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ ও আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
তিনি গতকাল সকালে নিমতলা পোর্ট কানেক্টিং রোড সংলগ্ন ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডস্থ নিমতলা মহেশখালের শাখা সংযোগ দিয়ার পাড়া এলাকায় খাল পরিষ্কার করতে গিয়ে এর দৃশ্যমান বিলুপ্ত প্রায় চিত্র দেখে এই ক্ষুব্ধ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মহেশখালের এই শাখা খালটি এক সময় বেশ বড় আকারের ছিল। এই খালের বুকে নৌযান চলাচল হতো, পণ্য ও যাত্রী পরিবহন হতো এবং খাল দিয়ে কর্ণফুলীতে পানি চলাচল করতো। নগরীতে এ ধরনের দু’ডজনেরও বেশি প্রশস্ত ও গভীর শাখা খাল ছিলো। এখন সবগুলোই বিলুপ্ত ও বেদখল হয়ে গেছে। একারণেই জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বিলুপ্তপ্রায় খাল পুনরুদ্ধার ও অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মাঠে নেমেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। প্রকল্পের ৪০ শতাংশ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এই মেগা প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে খালসহ পানি চলাচলের পথগুলো পরিষ্কার ও বাধামুক্ত করার অংশ হিসেবে দিয়ার পাড়া এলাকায় আজকের এই অভিযান। এই খালটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই।
তিনি বলেন, এই খালটিকে যারা ডাস্টবিনে পরিণত করেছে, খালের দু’পাড় দখল করে যারা এটাকে নালায় পরিণত করেছে তাদের আগামী সোমবার পর্যন্ত সময় দেয়া হলো-এর মধ্যে আবর্জনা পরিষ্কার ও খালের উপর থেকে অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে না নিলে পরদিন থেকে সরাসরি অ্যাকশন শুরু হবে। এই সময় খাল পরিষ্কার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যে খরচ হবে তা অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায়, জরিমানা, মালামাল জব্দসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, কোন ধরনের আবর্জনা ও বর্জ্য খালে ফেলা যাবে না। এখন থেকে যে বা যারা খালে আবর্জনা ফেললে তা তাদের নিয়েই পরিষ্কার করা হবে।
তিনি এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ, দেখ-ভাল ও নজরদারী করার জন্য এলাকায় মুরুব্বী, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা সহযোগিতা করুন। এ খালটিকে পুরোপুরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের মাধ্যমে এ খালে লাল পদ্ম ফুটিয়ে তোলা হবে। এলাকাবাসী যদি সহযোগী হয়ে এগিয়ে আসে তাহলে মাছের চাষ করে খালটির স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা হবে।
নগরবাসীর জন্য মনোরম হাঁটা-চলার পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে বলেও জানান চসিক প্রশসক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ ইলিয়াছ, কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ মোরশেদ আলী, ইমরান আহাম্মেদ ইমু, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাসান মোহাম্মদ মুরাদ, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী, প্রণব শর্মা, আলী আকবর। বিজ্ঞপ্তি