বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ওডিআই আজ

অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে তামিমের

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের মধ্যকার তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ কাল ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১১টায় মাঠে গড়াবে এ ম্যাচ। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল। ‘পঞ্চ পান্ডবের’ অন্যতম সদস্য। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সব সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরলে তামিম ইকবাল সেরাদের সেরা। টেস্ট-ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি- তিন ফরম্যাটেই রান তোলায় তিনি সেরা তিনে। সবচেয়ে বেশি ( টেস্টে মুমিনুল হকের সাথে যৌথভাবে ৯টি করে) সেঞ্চুরির মালিক। টেস্ট-ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বাধিক হাফ সেঞ্চুরিয়ানও। শুধু রান তোলা, সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানোয় দক্ষতা ও সাফল্য বেশি থাকাই শেষ কথা নয়। টিম বাংলাদেশের অন্যতম বড় ভিতও তামিম। গত একযুগে বাংলাদেশের সাফল্যে এ বাঁহাতি ওপেনারের অবদানও প্রচুর। কিন্তু তারপরও তাকে নিয়ে সমালোচনার কমতি নেই। বিশেষ করে তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে প্রায়ই তীর্যক কথাবার্তা শোনা যায়। খবর জাগো নিউজের।
সমালোচনা নেই কার? পারফরমার মাত্রই সমালোচনার শিকার হন। ভাল খেললে প্রশংসা আর খারাপ খেললে সমালোচনা, কটুক্তি, বাঁকা কথা-বার্তা- এগুলো খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তামিমের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তামিম সমালোচনা পাশ কাটাতে পারেন না। বরং সমালোচনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়া বা বাইরের সমালোচনা গায়ে মেখে নেন। সেটা তার মাঠের পারফরমেন্সকে প্রভাবিত করে। এবার সেই তামিম অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজেই কার্যত অভিষেক হচ্ছে নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের। এটুকু শুনে কেউ কেউ হয়ত বলবেন, কেন তামিম তো এর আগেও ক্যাপ্টেন্সি করেছেন। হ্যাঁ করেছেন। তবে সেটা ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে। ২ বছর আগে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর মাশরাফির ইনজুরি জনিত অনুপস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারের কনিষ্ট সদস্য। তবে পুরো অধিনায়ক হিসেবে এটাই তার যাত্রা শুরু। প্রশ্ন উঠেছে, অধিনায়কত্ব শুরুর সময়ও কি সেই তীর্যক কথা-বার্তা ও সমালোচনার তীর গায়ে বিদ্ধ হওয়ার কথা ভাবছেন তামিম? সমালোচনা সামলে উঠতে না পারলে যে পারফরম্যান্স ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে, দল পরিচালনাও কঠিন হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে- সে ব্যাপারে তার চিন্তা-ভাবনা কি? জানতে চাইলে তামিম আকার ইঙ্গিতে স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘হ্যাঁ তিনি সমালোচনা এড়াতে বা পাশ কাটাতে তার সমস্যা হয়। বরং সমালোচনা গায়ে মাখায় তার পারফরমেন্সও হয় ক্ষতিগ্রস্থ। ’ অধিনায়কত্বের নতুন ইনিংস শুরুর আগে ভার্চুয়াল প্রেস মিটে এ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তামিমের ব্যাখ্যা, ‘সত্যি কথা বলতে যত সমালোচনা শুনেছি, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারই শুনেছে। তো ওইদিক থেকে আমি পুরোপুরি তৈরি।’ তামিমের দাবি, তার সঙ্গে যেটা হয় তা কিছু কারণে হয়, আবার কিছু অকারণেও হয়। তবে অধিনায়ক হয়ে বাড়তি সতর্ক ও সাবধানী তামিম মেনেই নিয়েছেন, সমালোচনা হবেই। তাই মুখে এমন কথা, ‘আপনি যখন অধিনায়কের দায়িত্বটি গ্রহণ করেছেন তখন এটার সঙ্গে অনেক কিছু আসবে। এখানে ক্রিটিসিজম আসবে, রিয়েক্টও আসবে আবার প্রশংসাও হবে।’ তামিমের উপলব্ধি, অনুভব, আসল কাজ হচ্ছে নিজের দায়িত্বে মনোযোগী থাকা। ‘আমার কাছে মনে হয়, নিজের দায়িত্বে ঠিক থাকাই আসল কাজ।’ তামিমের শেষ কথা, ‘এখনই এই কথা যদি বাইরে গিয়ে বলি তাহলে আমি রেডি ফর ক্রিটিসিজম, রেডি ফর প্রেইজ কারণ আমি রোমাঞ্চিত। আগামীকাল থেকে সামনে এগিয়ে যেতে মুখিয়ে আছি, কিন্তু আজ থেকে তিন-চার মাস পর বা এক বছর পর আমি কিভাবে রিয়েক্ট করি সেটাও দেখার বিষয়। আমি সবসময় একটা জিনিস বলি যে আমার জন্য এটি এমন জিনিস বলেই আমি এনজয় করব না এমন না। এমনও হতে পারে যে দল খুব ভালো খেললে হয়তো বা আমি এনজয় করতে পারছি না। তখন সিদ্ধান্তটা আমি অন্যভাবে নিতে পারি। এখনই এই কথা যদি বাইরে গিয়ে বলি তাহলে আমি রেডি ফর ক্রিটিসিজম, রেডি ফর প্রেইজ (প্রশংসা কিংবা সমালোচনার জন্য তৈরি)। কারণ আমি রোমাঞ্চিত।’