ফের মানসিক বিপর্যয়ের মুখে ফেল্পস

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
কিংবদন্তি সাঁতারু মাইকেল ফেল্পস জানালেন, করোনা ভাইরাস অতিমারিতে তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত! অবিশ্বাস্য ২৩টি অলিম্পিক্স সোনার মালিক সকলের সঙ্গে জিমে বা সুইমিং পুলে না-থাকার যন্ত্রণা আর নিতে পারছেন না। নিজের ধারাবাহিক কলামে লিখেছেন, ‘আমার মেজাজে বার বার পরিবর্তন ঘটছে। মনটাও চূড়ান্ত বিক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। অতীতের অনেক অবসাদের মাস যেন ফিরে এসেছে আমার জীবনে।’
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া মারণ ভাইরাস নিয়ে তার বক্তব্য, ‘জীবনে অনেক খারাপ সময়ের মধ্যে গিয়েছি। কিন্তু অতিমারির এই সময়টার মতো এতটা ভয় কখনও পাইনি। ভাগ্য খুব ভাল তাই আমি আর আমার পরিবার নিরাপদে আছি। নিভৃতবাসের যন্ত্রণা নেই। সব জায়গা বিল মিটিয়ে দিয়ে চলে যেতে হচ্ছে না। টেবলে খাবার রেখে যাওয়ার দরকারও পড়ছে না। কিন্তু বিশ্বাস করুন তার পরেও মনে হচ্ছে আমি যেন যুদ্ধ করছি।’
রিয়ো অলিম্পিক্সের পরে (২০১৬) অবসর নিয়ে ফেল্পস বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বক্তব্য রেখে বেড়ান। বহু জায়গায় তিনি বলেছেন, কী ভাবে তার স্ত্রী নিকোলের সঙ্গ এবং মানসিক চিকিৎসা তাকে জীবনের বিভিন্ন অবসাদের পর্ব থেকে বার করে এনেছে। সম্প্রতি ফেল্পস জানিয়েছেন যে, প্রতি সকালে তিনি ৯০ মিনিট জিমে কাটান। কিন্তু লকডাউনের জন্য সেটা আর করতে পারছেন না। তাই তার জীবনের অবসাদের সেই কঠিন সময়টাই যেন ফিরে এসেছে।
‘এখন মনে হয়, আমার প্রত্যেকটি দিনই যেন নষ্ট হয়ে গেল। পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে মারাত্মক কোনও বিপর্যয়ের মতো। আবার মাথার মধ্যে ভিড় করে আসছে নানা নেতিবাচক চিন্তা। আর সেটা যখন হচ্ছে, তখন আমি ছাড়া নিজেকে অন্য কেউ অন্ধকার থেকে বার করতে পারছে না। নিজেকে এই কঠিন মানসিক অবস্থা থেকে টেনে আনতেও অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে,’ লিখেছেন ফেল্পস।
কিংবদন্তি এই সাঁতারু যোগ করেছেন, ‘মানসিক অবসাদ কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিবারই যেন আমি নিজেকে কঠিন কিছু শাস্তি দিচ্ছি। আসলে জীবনে যত বার কোনও ভুল করেছি, তত বারই আমি একই ভাবে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করেছি। এই ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে যদি আমি কোনও মানসিক আঘাত করি, তা হলে জানবেন, সেটা সম্পূর্ণ আমার দোষ। এ ভাবে চিন্তা করেই আমি শান্তি খুঁজি।’ আক্রান্ত না হয়েও লকডাউনের সৌজন্যে কার্যত নিভৃতবাসেই থাকতে হওয়া নিয়ে ফেল্পস আরও লিখেছেন, ‘দিনের পর দিন একই ভাবে কাটছে। আমি নিজেকে যেন একটা আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যে এনে ফেলছি। এবং সেটা খুব দ্রুত ঘটছে।’
খবর : আনন্দবাজার’র।